ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার উপায় বা রূপচর্চা

ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার উপায় সমূহের বিষয়বস্তু নিয়ে থাকছে আজকে আমাদের এই আলোচনা। সাথেই থাকছে স্থায়ী ফর্সা হওয়ার উপায়, যেমন টমেটো দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়, যা হতে আমরা অনেকেই অজ্ঞাত। আমাদের আজকের এই পোস্টের সাথে থেকে এবং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ে আপনি ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন।

ঘরোয়া-পদ্ধতিতে-ফর্স- হওয়ার-উপায়-বা-রূপচর্চা
আপনি যদি ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্যই। আমরা অনেকেই এর টুকটাক উপায় সম্পর্কে জানি তবে ত্বককে প্রাকৃতিক উপাদানের মাধ্যমে ফর্সা করার উপায় গুলো অবলম্বনে কিছু নিয়ম রয়েছে যা আমরা অনেকেই জানিনা। চলুন আজকের এই পোস্টে আমরা ঘরোয়া উপাদান ব্যবহার করে ফর্সা হওয়ার কিছু উপায় সম্পর্কে জেনে নিই।

ভূমিকা

প্রাচীন যুগ থেকেই গায়ের বর্ণ উজ্জল কিংবা শ্যামলা হলে মানুষের নানান রকম দৃষ্টিভঙ্গির দেখা মিলছে। প্রায় বেশিরভাগ মানুষের লক্ষ্য থাকে ত্বককে উজ্জল থেকে উজ্জ্বলতর করার দিকে। তবে শুধু ত্বক ফর্সা করলেই হবে না, জানতে হবে এর সঠিক নিয়ম যা হবে কেমিক্যাল মুক্ত ও যে পদ্ধতি অবলম্বনে ত্বক কোন ক্ষতির সম্মুখীন হবে না। আজকের পোষ্টের বিস্তারিত আলোচনায় আমরা জানবো ত্বক স্থায়ী ফর্সা হওয়ার উপায়, আলু দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়, লেবু দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় এবং ৭ দিনে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে।

স্থায়ী ফর্সা হওয়ার উপায়

ত্বকের যত্নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো ভিটামিন সি। ফর্সা, কোমল ও দাগ হীন ত্বকের যত্নের জন্য ঘরোয়া পদ্ধতি একটু জটিল ও সময় সাপেক্ষ হলেও এর ফলাফল বেশ ভালো। তাই ফর্সা হওয়ার জন্য প্রাকৃতিক উপায়ের কোন বিকল্প নেই। আপনি নারী হোন বা পুরুষ হোন না কেনো, সর্বত্রই সুন্দর মুখের কদর রয়েছে।

তাই নিজেকে ফর্সা আকর্ষণীয় করে রাখা জীবনের একটি অংশ। ত্বকের বর্ণ স্থায়ী ফর্সা বা রং উজ্জ্বল করার উপায় বিভিন্ন পদ্ধতিতে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। তবে স্বাভাবিকভাবে ত্বকের রং ফর্সা বা জন্য নিম্নে লিখিত উপায় গুলি অবলম্বন করা যেতে পারে।

আমাদের গায়ের বর্ণ উজ্জ্বল করার জন্য এবং রূপচর্চায় দুধ এবং কাঁচা হলুদের ব্যবহার বহুকাল ধরে চলে আসছে। এছাড়াও লেবু, মধু ইত্যাদি প্রাকৃতিক উপাদানের নির্যাস নিয়ে বিভিন্ন রকম পেস্ট, মাস্ক ইত্যাদি বাড়িতে তৈরি করে গায়ের রং ফর্সা করার জন্য ও বিভিন্ন রকম রূপচর্চার জন্য ব্যবহার করা হয় যার ফলাফল বেশ ভালোভাবে দেখা যায়।

আর অর্গানিকভাবে নিজেকে ফর্সা করে তোলার জন্য অবশ্যই নিজের খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনতে হবে। শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি খাদ্যের মাধ্যমে গ্রহণ করতে হবে এবং শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে হবে।
এছাড়াও প্রতিদিন উষ্ণ গরম এক গ্লাস দুধের সাথে আধা চা চামচ হলুদ বাটা মিশিয়ে পান করলে কিংবা সাথে মধু মিশিয়ে পান করলেও শরীর ভিতর থেকে ফর্সা হয়ে ওঠে এবং যা স্থায়ীভাবে লক্ষ্য করা যায়।

এছাড়া কিছু পদ্ধতি যেমন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, এবং সান-ব্লক ব্যবহার করা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা, পর্যাপ্ত ঘুম, ধূমপান ও মদ্যপাণ থেকে নিজেকে বিরত রাখা ইত্যাদি উপায়ে স্থায়ী ফর্সা ত্বক অর্জন করা সম্ভব। তবে জেনে রাখা ভালো যে বাজারে কিছু ফর্সা হওয়ার নাইট ক্রিম এখন খুব প্রচলিত এসবের পরিবর্তে যদি ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার উপায় বেছে নেয়া যায় তবে এটি ত্বকের জন্য খুব বেশি উপকারী হয়ে উঠে।

আলু দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

রূপচর্চার ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা যেমন নিরাপদ তেমনি উপকারী। আলুতে থাকা ভিটামিন খনিজ ও এনজাইম সমূহ তোকে ফর্সা করে তুলতে সহায়তা করে। ব্রণের দাগ, ডার্ক সার্কেলস, পিগমেন্টেশন বা কালো ছোপ দাগ সরাতে, বার্ধক্যের ছাপ কমাতেও এর জুরি নেই।

আলুর ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, পসফরাস জিংক এবং ম্যাগনেসিয়াম এর মত উপাদান গুলো প্রাকৃতিক হিসেবে ত্বকে ব্লিচিং এর এলিমেন্ট হিসেবে কাজ করে। ফলে ত্বক হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত- উজ্জল ও ফর্সা। আলু দিয়ে তোকে ফর্সা করার কিছু উপায় নিম্নে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো।

আলুর স্টার্চ এর ব্যবহার : আলুকে গ্রেট করে সেগুলো থেকে আলুর রস চিপে নিয়ে একটি পাত্রে বের করে রাখতে হবে। আলুর এই রস সাত থেকে দশ দিনের জন্য স্টোর করে রেখে দিতে হবে। এরপর এটি জমে প্রস্তুত হয়ে গেলে তাতে গোলাপজল মিশিয়ে হালকা পেস্টের মত আবরণ আসার পর তা ফেস মাস্ক এর মত মুখে ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে মুখের বলিরেখা দূর হয় ও কালো ছোপ দাগ গুলো ধীরে ধীরে কমে যেতে থাকে।

রোদে পোড়া ত্বকের জন্য আলুর ব্যবহার : আমরা ঘরের বাহিরে বের হলে রোদের জন্য ত্বকে অনেক সময় পোড়া ভাব দেখা যায় যাকে আমরা ট্যানিং বলি। রোদে ত্বকের এভাবে পড়ে যাওয়াতে অনেক সময় ত্বকে জ্বালা ভাব হয় যার নিয়মিত যত্ন না নিলে করুণ রূপ ধারণ করে।

তবে রোদে পুড়ে যাওয়া ত্বকের ওই অংশগুলোতে পাতলা টুকরো কেটে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত রেখে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। অথবা চার্জ বা রস সরাসরি নিয়ে মুখে রেখে কিছুদিন পর ধুয়ে ফেললেও ধীরে ধীরে এই পদ্ধতি অবলম্বনে ত্বকের এই রোদে পোড়া দাগ দূর হয়ে ত্বক ফর্সা হয়ে ওঠে।

আলুর ফেসপ্যাক : আলুর ফেসপ্যাক অনেক কিছু দিয়ে বানানো সম্ভব তবে সবচেয়ে সহজ ফেসপ্যাক টি হল সাথে মধুর মিশ্রণের ফেসপ্যাকটি। তিন চা চামচ আলুর রসের সাথে দুই চা চামচ মধু মিশিয়ে ফেসপ্যাকটি মুখে বা গলায় লাগিয়ে কিছুক্ষণ মেসেজ করার পর ৫ থেকে ১০ মিনিট রেখে তা স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই ফেসপ্যাক প্রতিদিন ব্যবহারে ফলাফল আপনি নিজেই দেখতে পারবেন।

রূপচর্চায় আলুর স্লাইস : আলু আমাদের চোখের ডার্ক সার্কেলস দূর করতে সহায়ক হিসেবে কাজ করে এই কথা আর অজানা নেই। অবসর সময়ে আলোর দুইটা স্লাইস অথবা কুচি করা বা গ্রেট করা আলু অ্যালোভেরার সাথে মিশিয়ে চোখের চারপাশের দাগের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

আলু দিয়ে তৈরি স্ক্রাব : ত্বককে তার বাস্তব বনে ফিরিয়ে আনতে অথবা উজ্জ্বল বর্ণনা করে তুলতে মুখমণ্ডল পরিষ্কার রাখার চেয়ে বড় আর কিছু হতে পারে না। এর জন্য দরকার নিয়মিত ত্বকের স্ক্রাবিং করা। রূপচর্চায় আলুর স্ক্রাব খুবই পরিচিত। গ্রেট করা আলুর সাথে এবং তরল দুধ মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করা হয়। এটি ফেসের মধ্যে ৫-১০ ইনিক্স এর জন্য আলতো ভাবে স্ক্রাব করে এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। ফলে মুখ হয়ে উঠবে প্রাণবন্ত উজ্জ্বল ও কোমল।

আলুর ফেসমাস্ক : রূপচর্চায় আলুর ফেস মাস্কের বিকল্প নেই। সমপরিমাণ আলুর রস, বেসন ও লেবুর রস একত্রে মিশিয়ে যে ফেস মাস্কটি তৈরি হবে তা ত্বকে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের এর জন্য লাগিয়ে এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিবেন। এই ফেস মাস্কের উপকারিতা হিসেবে রয়েছে বার্ধক্য রোধ এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করা।

এছাড়া ব্রণের দাগ সরাতে আলুর রসের সাথে সমপরিমাণ টমেটোর রস এবং অর্ধ সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে প্রস্তুতকৃত প্যাকটি ব্যবহার করা যেতে পারে।

টমেটো দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

টমেটোতে রয়েছে লাইসোপিন নামক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা ত্বকের প্রেগমেন্টেশন দূর করে, বলিরেখা সারিয়ে তুলে ও ত্বকের শুষ্ক ভাব দূর করে ত্বককে মসৃণ করে তোলে। আরো রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও পটাশিয়াম কে ভাইবার সমূহ যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। টমেটো চুল ও স্বাস্থ্য উভয়ের জন্য এক ভীষনক উপকারী উপাদান। টমেটো দিয়ে ফর্সা হওয়ার কিছু উপায় নিম্নে উল্লেখ করা হলো :
  • চোখের নিচের কালো দাগ বা ডার্ক সার্কেল ও মুখমণ্ডলে বার্ধক্যের ছাপ দূর করতে টমেটো বেশ কার্যকরী উপাদান। এর জন্য টমেটো ও লেবুর সমপরিমাণ একটি পাত্রে মিশিয়ে এর মিশ্রণটি মুখের যেখানে দাগ রয়েছে সেখানে বেশ কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখুন। এরপর তাপমাত্রায় থাকা পানি দিয়ে ফেসওয়াশের সাহায্যে মুখটি ধুয়ে ফেলুন। এই মিশ্রণটি নিয়মিত ব্যবহার করলে মুখের এই ছোট দাগগুলো দূর হয়ে মুখ উজ্জ্বল বর্ণের দেখাবে।
  • রোদে পোড়া দাগ দূর করার উপশম হিসেবে টমেটোর জুড়ি নেই। ত্বকের যে অংশ রোদের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেখানে একটি গোটা টমেটো দুভাগ করে অভ্যন্তরীণ অংশটি ভালো করে ঘষে নিতে হবে। এরপর এই অবস্থায় ১০/১৫ মিনিটের মত কিছুক্ষণ সময় রেখে দিতে হবে এবং তারপর পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। নিয়মিত ব্যবহারে রোদে পোড়া দাগ ও শরীরের ট্যান সমূহ টমেটোর মাধ্যমে দূর হয়ে যাবে।
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য এক টেবিল চামচ টমেটো রসের সাথে সমপরিমাণে কমলালেবুর রস ও শসার রস দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। এই মিশ্রণটি পরিচ্ছন্ন মুখে প্রায় ৩০ মিনিটের মতো লাগিয়ে রাখা যেতে পারে এবং পরে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুই থেকে তিন বার নিয়মিত ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বকের রং ফর্সা হতে দেখা যাবে।
  • টমেটো দিয়ে তৈরি পিউরি ব্যবহার করে ত্বকের বর্ণ ফর্সা হওয়া সম্ভব। এ পিউরি গোটা মুখে ফেসপ্যাক এর মত লাগিয়ে কিছুক্ষণ মাসাজ করুন। ১০-১৫ মিনিট এই অবস্থায় পিওরী মুখে লাগিয়ে রেখে এরপরে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত টমেটোর পিওরি ব্যবহার ও আপনি আপনার ত্বকের রং ফর্সা হতে লক্ষ্য করবেন।
  • টমেটো দই এবং হলুদের একটি মিশ্রণ আপনার আপনার ত্বককে করে তুলতে পারে উজ্জ্বল ও মসৃণ। ছোট ছোট কুচি করে রাখা টমেটো গুলি সাথে ফ্রেস তুই মিশিয়ে সেই সাথে খানিকটা কাঁচা হলুদ একসাথে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। প্রস্তুতকৃত এই প্যাকটি গলায়, ঘাড়ে এবং শরীরে যে কোন স্থানে, আপনার যেখানে মনে হবে উজ্জ্বল করা প্রয়োজন সেখানে লাগাতে পারেন। এই প্যাকটি ত্বকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত রেখে দিয়ে এরপর পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটিও সপ্তাহে দুই থেকে দিন দিন করে নিয়মিত ব্যবহার করলেই আপনার তারুণ্য ও উজ্জ্বলতা উভয় ফিরে আসবে এবং আপনাকে দেখতে আরো ফর্সা লাগবে।
  • এছাড়া টমেটো ও মধুর মিশ্রণে আপনার ত্বক হয়ে উঠতে পারে উজ্জ্বল বা ফর্সা।
  • টমেটো শুধু মুখে মাখিয়েই নয় বরং এর মাধ্যমে সেবন করলেও মিলতে পারে অনেক উপকারিতা। নিয়মিত এক থেকে দুইটি টমেটো সেবন করলে আপনার ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল এছাড়াও এতে থাকা অ্যাসিডিক পদার্থ আপনার গ্যাস্ট্রিক এসি ফোনকে উদ্দীপিত করে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। টমেটো মুখে মাখলে যেমন বিভিন্ন রকমের নিরাময় পাওয়া যায় তেমনি টমেটো নিয়মিত প্রায় ৫০ থেকে ১০০ গ্রাম কাছে টমেটো সেবনের ফলে ব্রনের দ্বারা হয়ে থাকা দাগ এবং চিহ্ন থেকে আপনি মুক্ত হতে পারেন।

লেবু দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

লেবু তো রয়েছে ভিটামিন সি যা ত্বকের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী এক উপাদান। আমাদের ত্বককে সুস্থ এবং দেখতে উজ্জ্বল এবং মসৃণ করে তোলার জন্য ভিটামিন সি উপাদানের উপর কিছুই নেই। লেবুর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হয়েছে।

এর এসিরিক উপাদান গুলো ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে এবং কালো দাগ আছে তা হালকা করে তোলে অর্থাৎ সহজ ভাষায় বলতে গেলে এটি আপনার ত্বকের সকল পিগমেন্টেশন দূর করতে সহায়ক। এছাড়াও ব্রনের চিকিৎসা বা দাগ দূর করতে, বার্ধক্যের ছাপ নিঃসরণ করতে লেবুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

রূপচর্চায় লেবুর ব্যবহার :

লেবু একক ভাবেই ত্বকের জন্য উপকারী উপাদান তবে এর মিশ্রণ ও ত্বকের জন্য বেশ উপকারী হতে পারে। যেমন মধু বা চিনি বা দুধ এর মতো প্রাকৃতিক উপাদান গুলোর সাথে লেবু মিশিয়ে মুখের জন্য ব্যবহার করলে আপনার ত্বকে উজ্জ্বল করতে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
  • মধু এবং লেবুর এই মিশ্রণটি আমাদের সকলের চেনা এবং বহুল পরিচিত একটি মিশ্রণ।
  • মধু, লেবুর রসএবং চিনি একত্রে মিশিয়ে মিশ্রণ বানিয়ে সেটি মুখে বা হাতে স্ক্রাব এর মত করে ব্যবহার করা যেতে পারে যা আপনার ত্বক করে তুলবে একদম পরিষ্কার এবং ভেতর থেকে সকল ময়লা বের করে নিয়ে আসতে সাহায্য করে।
  • তাছাড়া অন্যান্য মিশ্রণের মধ্যেও লেবু বেশ ব্যবহার করা হয় যেমন অ্যালোভেরার মিশ্রণে লেবুর রস ব্যবহার করে প্যাক বানিয়ে তা ত্বকে উজ্জ্বল করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
  • আলু এবং লেবু একসাথে মিশিয়েও অনেক রকমের প্যাক তৈরি করা সম্ভব।
  • তবে খেয়াল রাখতে হবে, লেবু আপনার ত্বকে ভালোমতো শোষণ করছে কিনা। যেহেতু লেবু তে প্রচুর পরিমাণে অ্যাসিড রয়েছে তাই এটি সকলের ত্বকে ব্যবহারযোগ্য নাও হতে পারে।
  • এছাড়াও লেবুর রস ব্যবহারের ফলে আপনার মুখের কোলা যেন উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, এর অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য আপনার ত্বকে ফুসকুড়ি মতো ছত্রাক সংক্রমণে বাধা দিবে, এবং অবশ্যই আপনার ত্বকে উজ্জ্বল করার জন্য এটি একটি অন্যতম উপাদান হিসেবে কাজ করবে, ব্রনের দাগ দূর করবে।
তবে নোট হিসেবে বলা যায়, লেবুর রস দিয়ে তৈরি করা ফেসপ্যাকগুলো সাধারণত তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেশ কার্যকরী এবং এর প্যাকগুলি তৈলাক্ত ত্বকের জন্যই ব্যবহার যোগ্য করে ধারণা করা যায়।

ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার উপায়

ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার উপায় এর কথা বললে সর্বপ্রথম মাথায় আসবে প্রাকৃতিক পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা। তবে প্রাকৃতিক অনেক উপাদান দিয়েই ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা, কোমল ও দাগ দূর করা যেতে পারে। ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার জন্য বিভিন্ন উপায়ে রয়েছে যার প্রায় সব ই প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে প্রস্তুত করা হয়।

এর জন্য লেবু, কাঁচা হলুদ, দই, টমেটো, আলু, অ্যালোভেরা, মধু,শশা, তেঁতুল ইত্যাদি উপাদান রয়েছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ উপাদানকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়। ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার উপায় জানার জন্য আপনার রান্নাঘরে উপস্থিত যেকোনো প্রাকৃতিক ও ভিটামিন সমৃদ্ধ উপাদান দিয়ে আপনি রূপচর্চা শুরু করে দিতে পারেন।

যেমন - দুধ ও কলা দিয়ে তৈরি মিশ্রণে যে পেস্টটি বের হয় তার নিয়মিত ফেসপ্যাক এর মত ব্যবহারে আপনার ত্বক ফর্সা হতে শুরু করবে। সুস্বাস্থ্য এবং উজ্জল ও কোমল ত্বকের জন্য ডাবের পানির কোন বিকল্প নেই। ডাবের পানি খাওয়া থেকে শুরু করে মুখে লাগানো পর্যন্ত দুটির মাধ্যমেই আপনার ত্বককে আপনি করে তুলতে পারেন উজ্জ্বলতর।

চুলের গঠন ভালো করতে ও মসৃণতা ধরে রাখতে ডিমের ব্যবহার আমরা সকলেই জানি তবে ত্বক ফর্সা করার জন্য রূপচর্চায় ডিমের কুসুমের ব্যবহার অতুলনীয়। একটি ডিমের কুসুমের অংশ কেটে নিয়ে সেটি পেটের মতো করে মুখে কিছুক্ষণ লাগিয়ে খানিকটা সময় পরে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।

নিয়মিত ব্যবহারে কিছু সময়ের মধ্যেই আপনি এর দারুন ফলাফল লক্ষ্য করতে পারবেন। কথা যখন ঘরোয়া পদ্ধতির, তখন দুধ ও মধু সব জায়গাতেই থাকবে। কাঁচা দুধের বিভিন্ন রকম ব্যবহারে খুব দ্রুতই ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়া যায়।

৭ দিনে ফর্সা হওয়ার উপায়

ফর্সা হওয়ার জন্য সাত দিনের কিছু উপায় থাকলেও এই উপায় গুলি মোটেও স্থায়ীভাবে টিকে না। অর্থাৎ সাত দিনের কিছু উপকরণের মাধ্যমে আপনার ত্বকের রং উজ্জ্বল বর্ণের হয়ে গেলেও এটি স্থায়ীভাবে থাকবে না।
  • তবে ৭ দিনে ফর্সা হওয়ার জন্য ঘরোয়া কিছু ফেসপ্যাক এর মধ্যে লেবু, হলুদ, টমেটো, মধু, দুধ, শসা, বেসন ইত্যাদি দিয়ে প্রস্তুতকৃত প্যাকগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • আপনার ত্বককে হাইড্রেট রাখতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণে জল পান করতে হবে।
  • ৭ দিনে উজ্জ্বল বর্ণের হতে হলে অবশ্যই আপনাকে রোদ থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। কেননা রোদের মধ্যে একদিন কি কিছু সময়ের মধ্যেই আপনার ত্বকের বর্ণ শ্যামলা হয়ে যেতে পারে তাকে রোদে পোড়া বা আমরা ট্যান বলে থাকি।
  • সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যকর খাবারের উপর থাকতে হবে।
  • প্রতিদিন ৩০ মিনিটের মত ব্যায়াম করতে হবে পরিমাণে ঘুমাতে হবে।

লেখক এর মন্তব্য

আশা করি আজকের এই রূপচর্চার আলোচনা মূলক পোস্টের মাধ্যমে আপনারা ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে অনেক নতুন তথ্য জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন থাকে বা কোন মতামত জানাতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন এবং পোস্টটি শেয়ার করে আপনার আশেপাশের মানুষকে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার ব্যাপারে জানার সুযোগ করে দিন।
ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url