পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এর তথ্য এবং পেয়ারার বৈশিষ্ট্য নিয়ে আজকের এই পোষ্টের বিস্তারিত আলোচনা। যা হয়তো এখন পর্যন্ত আপনারা অন্য কোথাও থেকে জানতে পারেন নি। আপনার অজানা তথ্য গুলোকে আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে তুলে ধরেছি। আশা করছি সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি বিস্তারিত সবকিছু সম্পর্কে জানতে বা বুঝতে পারবেন।
পেয়ারা-খাওয়ার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা-সম্পর্কে-বিস্তারিত-জানুন
ফল তো আমরা সবাই খাই কিন্তু প্রতিটি ফলের কিছু নিজস্ব গুনাগুন এবং উপকারিতা রয়েছে তা কি আমরা জানি? তাহলে চলুন আজ আমাদের এই পোষ্টের মাধ্যমে জেনে নেই দেশীয় সস্তা এবং সহজলভ্য ফল পেয়ারার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

ভূমিকা

পেয়ারা হল একটি খুবই জনপ্রিয় ফল। এটি বিভিন্ন রকমের রং এবং আকারের পাওয়া যায়। পেয়ারা খুবই স্বাস্থ্যকর এবং এটি খুব সহজেই সব জায়গায় পাওয়া যায়। পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতার তথ্য এবং পেয়ারার অসাধারণ পুষ্টিগুণ আমাদের অনেকেরই অজানা। ত্বককে টানটান ও উজ্জল রাখতে এবং ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও অনেক ভালো একটা প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে একটি মাত্র পেয়ারা। এটি খাদ্য হিসেবে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

পেয়ারার বৈশিষ্ট্য

বর্ষার একটি সুস্বাদু ফল পেয়ারা। এই ফলের ফলন সাধারণত বর্ষার মৌসুমে হলেও এখন প্রায় সব মৌসুমেই এই ফল বাজারে পাওয়া যায়। অর্থাৎ প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায় এমন একটি ফল হচ্ছে পেয়ারা। দেশীয় ফল হিসেবে পেয়ারা একটি সস্তা ও সহজলভ্য ফল। পেয়ারা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ভালো এবং পুষ্টিকর উপাদান যা আমাদের দেহের প্রতি দিনের প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে থাকে।

পেয়ারার বৈজ্ঞানিক নাম

পেয়ারার বৈজ্ঞানিক নাম sdium guajava. বলা চলে এরা Myrtaceae পরিবারের সদস্য এদের উপ-পরিবার হচ্ছে Myrtoideae. ১০০ টির ও বেশি প্রজাতি রয়েছে পেয়ারার। বাজারে প্রায় ভিন্ন ভিন্ন বর্ণের পেয়ারা দেখতে পাওয়া যায়। এর মধ্যে লাল রংয়ের পেয়ারা অন্যতম যাকে রেড অ্যাপেলও বলা হয়ে থাকে।

পেয়ারার পুষ্টি গুন

বিশেষজ্ঞদের মতে, চারটি কমলালেবুর সমপরিমাণ পুষ্টিগুণ বিদ্যমান থাকে একটি পেয়ারায়। শুধুমাত্র কমলালেবু নয় চারটি আপেলের সমপরিমাণ পুষ্টিগুণও বিদ্যমান থাকে একটি পেয়ারায়। তাহলে এখানেই বোঝা যায় একটি পেয়ারাতেই রয়েছে কত গুণ।

ভিটামিন সি এর খুব ভালো একটি উৎস হচ্ছে পেয়ারা।পেয়ারাতে আরো রয়েছে, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন কে, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফাইবার, খনিজ পদার্থ, প্রোটিন এবং প্রচুর পরিমাণে পানি। পেয়ারার বীজেও রয়েছে ওমেগা-৩, ওমেগা-৬, পলিয়ান-সেচুরেটেড ফার্টি এসিড ও আঁশ।

আমরা অনেকেই হয়তো জানি না যেকোনো ফলের ভিটামিন এ কখনোই সরাসরি পাওয়া যায় না তাই এটি প্রথমে ক্যারোটিন রূপে থাকে যা পরবর্তীতে ভিটামিন - এ তে রূপান্তরিত হয়ে যায়। এবার তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক খালি পেটে পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতার পেছনের কারণ এবং প্রতি ১০০ গ্রাম পেয়ারাতে আমরা কি কি পেয়ে থাকি।
  • ভিটামিন এ - ৬২৪ আইইউ
  • ক্যালসিয়াম - ১৮ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন সি - ২২৮ মিলিগ্রাম
  • ম্যাগনেসিয়াম - ২২ মিলিগ্রাম
  • কলেস্টরেল - ০ মিলিগ্রাম
  • চর্বি - ০.৯৫ গ্রাম
  • পটাশিয়াম - ৪১৭ মিলিগ্রাম
  • ফসফরাস - ১১ মিলিগ্রাম
  • লাইকোপেন - ৫২০৪ মাইক্রোগ্রাম
  • লৌহ - ০.২৬ মিলিগ্রাম
  • সোডিয়াম - ২ মিলিগ্রাম
  • চর্বি - ০.৯৫ গ্রাম
  • পটাশিয়াম - ৪১৭ মিলিগ্রাম
  • জিংক - ০.২৩ মিলিগ্রাম
  • খাদ্য শক্তি - ৬৮ কিলো ক্যালরি
  • আমিষ - ২.৫৫ গ্রাম
  • শর্করা - ১৪.৩ গ্রাম

পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

প্রতিদিন একটি মাত্র পেয়ারা নানা রকম স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে আমাদের রেহাই দিতে পারে। আবার এই পেয়ারাই মাত্রাতিরিক্ত সেবনের ফলে হতে পারে নানান অসুবিধা। তাই এই দুই বিষয়েই আমাদের অবগত থাকা দরকার। পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সমুহের বিস্তারিত সব তথ্য নিম্নে উল্লেখ করা হল।

পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা

আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য পেয়ারার উপকারিতার বিষয়ে জানলে সবাই চমকে উঠবেন। তবে চলুন এবার জেনে নেয়া যাক স্বাস্থ্যের জন্য পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা সমূহ।

রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন-সি থাকায় মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। দেহের কাটা ছেড়া বা ক্ষতস্থান শুকাতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এর গুরুত্ব অপরিসীম। পেয়ারা খেলে বিভিন্ন রকম ইনফেকশন থেকে শরীরকে মুক্ত রাখা যায়। তাছাড়া পেয়ারা খেলে শরীরে বিভিন্ন রোগ জীবাণুর সাথে লড়াই করার ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়।

ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর করেঃ বিভিন্ন ধরনের ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর করতেও পেয়ারার তুলনা নেই। সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি ঠান্ডা জাতীয় সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় পেয়ারা খেলে। বুকের জমে থাকা স্নেসা কমাতেও সাহায্য করে পেয়ারায় অবস্থিত আয়রন এবং ভিটামিন সি। তবে ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর করতে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী ভূমিকা রাখে কাঁচা পেয়ারা।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ গবেষণায় দেখা গেছে, পেয়ারাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম যা রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং রক্তের লিপিড কমিয়ে আনে। কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি কমাতে প্রতিদিন নিয়ম করে লাইকোপিন সমৃদ্ধ গোলাপী পেয়ারা খাওয়া উচিত। তাছাড়া পেয়ারা শরীরে থাকা ট্রাই গ্লিসারাইড এবং এলডিডি নামের একটি খারাপ কোলেস্টরেল এর মাত্রা কমানোর মাধ্যমে হার্টের অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমাতে সাহায্য করে।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ ক্যান্সার প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও পেয়ারার ভূমিকা অপরিসীম। এটি মানব দেহের কোষ কে রক্ষা করে এবং ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমায়। পেয়ারাতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও লাইকোপেন ক্যান্সার কোষের বিরুদ্ধে লড়াই করে ফলে ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা হয়। পেয়ারাতে থাকা ভিটামিন সি বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ প্রতিরোধে যেমন সহায়তা করে তেমনই স্তন ক্যান্সার ও প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধেও সহায়তা করে।

থাইরয়েডের গ্রন্থি কার্যকর রাখেঃ থাইরয়েড রোগের ক্ষেত্রেও উপকারী একটি ফল হচ্ছে পেয়ারা। এতে উপস্থিত পুষ্টি উপাদান সমূহ থাইরয়েড রোগীদের জন্য অনেক উপকারী। তাই থাইরয়েডের রোগীদের কে চিকিৎসকরা সবসময় পরামর্শ দেন দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় একটি পেয়ারা রাখার। পেয়ারায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কপার যা থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণের সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

মাসিকের ব্যথা দ্রুত উপশম করেঃ প্রায় বেশিরভাগ নারীদের ক্ষেত্রেই দেখা গেছে মাসিক অথবা রজস্রাবের চলাকালীন সময়ে পেটে প্রচন্ড পরিমাণে ব্যথা হয়। এই ব্যথার পরিমাণ এত বেশি হয় যে, ব্যাথা থেকে উপশম পেতে ঔষধ খেয়ে থাকেন অনেকেই।

এ সময় যদি ওষুধের পরিবর্তে হাতের কাছে থাকা খাবার অথবা ঘরোয়া কিছু প্রয়োগ করে যদি ব্যথা কমানো যায় তবে কতই না ভালো হয় এমনটাই মনে হয় তখন প্রতিটি নারীর। এ সময় বেশি কিছু না করে যদি একটি পেয়ারার রস করে অথবা পেয়ারা পাতার রস করে বা ভালো করে চিবিয়ে খাওয়া যায় তাহলে মাসিক কালীন ব্যথা অতি দ্রুততর সময়ের মধ্যেই কমে যায়।

দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখতে প্রয়োজন ভিটামিন এ এর এবং কাঁচা পেয়ারাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ। পেয়ারাতে থাকা ভিটামিন এ রাতকানা রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও দারুন ভূমিকা রাখে। তাছাড়া চোখের ভিতরে ছানি পড়ার প্রবণতা অথবা সাদা প্রলেপ দেখা যাওয়ার সম্ভাবনাটাও অনেকটা কমে যায় পেয়ারা খেলে।

শরীরের পেশী এবং স্নায়ু শিথিল রাখেঃ পেয়ারা হচ্ছে একটি ম্যাঙ্গানিজ সমৃদ্ধ ফল যা আমাদের দেহের বিভিন্ন কার্যসম্পাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বলে রাখা বাহুল্য যে ম্যাঙ্গানিজ এবং ম্যাগনেসিয়াম এক জিনিস নয়। তাছাড়া শরীরে ম্যাঙ্গানিজের ঘাটতি পূরণ করতে খাদ্যের বিকল্প আর কিছুই নেই।

পেয়ারা আমাদের স্নায়বিক আরাম প্রদান করে থাকে এবং শরীরের পেশী এবং স্নায়ু শিথিল করতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে। আপনি যদি কোন কঠিন কাজ করার পরে একটি পেয়ারা খেয়ে দেখেন তাহলেই আপনার শরীরের সিস্টেমের চমৎকার শক্তির সঞ্চারের তফাৎটা বুঝতে পারবেন।

বয়সকালীন রোগে সহায়তা করেঃ বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষের দেহে বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা দেয় যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে স্মৃতিভ্রংশ এবং আর্থাইটিস বা হাটু ব্যথা। বয়সকালীন এসব রোগ থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন পেয়ারা।

দেহের ওজন কমায়ঃ দিন দিন যাদের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বেড়েই চলেছে তাদের জন্য পেয়ারা খুবই উপকারী একটি ফল। পেয়ারা খুব সহজেই শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাই বলা আবশ্যক যে, ওজন কমানোর ক্ষেত্রে খুব ভালো প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করতে পারে পেয়ারা কারণ পেয়ারাতে গ্লুকোজের পরিমাণ অনেক কম থাকে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের রাখেঃ দেহের চিনি শোষণের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে পেয়ারাতে থাকা ফাইবার। যার কারণে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য পেয়ারা দারুন উপকারি একটি ফল।গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়াবেটিস প্রতিরোধী যে উপাদান আছে তা পেয়ারার পাতা এবং রসে পাওয়া যায়।

এজন্য আপনি চাইলে প্রতিদিন এক কাপ গরম পানিতে কচি পেয়ারা পাতা শুকিয়ে মিহি করে গুঁড়ো করে এক চা চামচ পরিমাণ পাতা দিয়ে মিশিয়ে পাঁচ মিনিট ঢেকে রেখে দিয়ে তারপর থেকে পান করতে পারেন। তাছাড়া ডায়বেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমাতে পেয়ারা খাওয়া অত্যাবশ্যক কারণ এতে আরো আছে প্রচুর ফাইবার এবং কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যা রক্তের শরকরার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে।

মানসিক চিন্তা দূর করেঃ মানসিক চিন্তা বা স্ট্রেস দূর করতেও দারুন ভাবে কাজ করে পেয়ারা। এটি স্নায়ু এবং পেশির কার্যকারিতাও বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এভাবে বললে মন্দ হবে না যে, পেয়ারা খেলে যেমন একদিকে মানসিক চাপ কমে তেমনি দেহের শক্তিও বৃদ্ধি হয়।

ত্বক সুস্থ রাখেঃ পেয়ারা খেলে যেমন শারীরিক দুর্বলতা কাটানো যায় ঠিক তেমনি পেয়ারা মানব দেহের ত্বকের জন্যও বেশ উপকারী। পেয়ারায় প্রচুর পরিমাণে পানি থাকার কারণে ত্বক হয়ে উঠে উজ্জ্বল এবং টানটান। শীতকালীন সময়ে ত্বকের রুক্ষতা দূর করে এবং শীতে পা ফাটার সমস্যা থেকেও মুক্তি দেয়।

মানব দেহের ত্বক কে আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে রক্ষা করে পেয়ারা। পেয়ারা খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতায় বৃদ্ধি হয়, ত্বক মসৃণ হয়। অনেকেই দীর্ঘদিন ত্বকের যৌবন ধরে রাখতে নিয়মিত পেয়ারা খেয়ে থাকেন। সাথেই চুল এবং দাঁতের ও পুষ্টি যোগায় পেয়ারা।

পেটের নানান অসুখ দূর করেঃ পেটের নানা অসুখ যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য, আমাশয়, ডায়রিয়া সহ পেটের বিভিন্ন ধরনের অসুখ সারাতে খুব ভালো কাজ করে পেয়ারা। যেসব ব্যক্তি নিয়মিত পেয়ারা খায় তাদের ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা অনেকটা কমে যায়। কারন পেয়ারায় আছে ব্যাকটেরিয়ার সাথে লড়াই করার অসীম ক্ষমতা।

গর্ভবতী মায়েদের জন্য উপকারীঃ গর্ভবতী মায়েদের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি ফল পেয়ারা। গর্ভের শিশুর স্নায়ুতন্ত্র গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে পেয়ারায় বিদ্যমান থাকা ফলিক অ্যাসিড। আবার গর্ভের শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের বিভিন্ন রোগ প্রতিহত করতেও সাহায্য করে পেয়ারার পুষ্টিগুণ।

পেয়ারা খাওয়ার অপকারিতা

প্রতিবেটিক খাদ্যদ্রব্যের একটি পরিমাণ রয়েছে। পরিমাণের তুলনায় বেশি পেয়ারা খেলে অনেক ক্ষেত্রে অনেক রকম সমস্যা হয়ে থাকে। পেয়ারা খাওয়ার অপকারিতা গুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
  • পরিমাণের তুলনায় অতিরিক্ত পেয়ারা খেলে পেট খারাপ হওয়ার অনেকাংশের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • গর্ভবতী মায়েরা যদি পরিমাণের চেয়ে বেশি পেয়ারা খেয়ে থাকেন সেই ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিতে পারে যা গর্ভস্থ শিশুর জন্য হয়ে ওঠে মারাত্মক ক্ষতির কারণ।
  • পেয়ারে একটি ঠান্ডা ফল তাই সর্দি কাশি লেগে থাকলে পেয়ারা খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো।
  • অতিরিক্ত পেয়ারা খেলে অনেক ক্ষেত্রে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাও হয়ে থাকে।
  • কিছু কিছু মানুষের পেট ফাঁপার সমস্যা থেকে থাকে। যাদের পেট ফাঁপার সমস্যা রয়েছে তাদের একটু কম পরিমাণে পেয়ারা খাওয়া উচিত। কারণ বেশি পরিমাণে পেয়ারা খেলে তাদের হজমের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

খালি পেটে পেয়ারা খেলে কি হয়

শুধুমাত্র পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানাটাই গুরুত্বপূর্ণ না খালি পেটে পেয়ারা খেলে কি হতে পারে সেটাও আমাদেরকে জানতে হবে।
  • খালি পেটে পেয়ারা খেলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে শরীরের ছোট ছোট অনেক রোগ দূর হয়।
  • সচরাচর যাদের মুখে অতিরিক্ত ঘা হয় তারা যদি খালি পেটে একটি পাকা পেয়ারা খান তাহলে তাদের এই সমস্যাটা দূর হতে পারে।
  • রক্তে ভিটামিন সি-এর অভাবে যাদের স্কার্ভি রোগ হয় তাদের ক্ষেত্রেও খালি পেটে একটি পাকা পেয়ারা অনেক উপকারী।
  • আমরা জানি চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে ভিটামিন এ এবং এই ভিটামিন এর ঘাটতি পূরণ করতে সকালে খালি পেটে একটি পাকা পেয়ারায় যথেষ্ট।

পেয়ারা খাওয়ার নিয়ম

সাধারণত একটি মানুষের স্বাস্থ্যের বা শরীরের উপর নির্ভর করে তার পেয়ারা খাওয়ার নিয়ম। অর্থাৎ এক এক মানুষের জন্য একেক রকম নিয়ম হতে পারে পেয়ারা খাওয়ার। তবে বলা যেতে পারে একটি পেয়ারা খাওয়ার নিয়মের সর্বপ্রথম ধাপ হচ্ছে পেয়ারা চয়ন করা। তাই অবশ্যই আপনার চয়ন করা পেয়ারাটি অবশ্যই তাজা হতে হবে। এবং এটি কাদের জন্য উপযোগী এবং এটি কাদের খাওয়া উচিত নয় সে সম্পর্কে উপরে পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতার মধ্যে বিস্তারিত পেয়ে যাবেন।

লেখকের মন্তব্য

উপরোক্ত আলোচনা সাপেক্ষে বলা যায় যে, আমাদের সবার প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় একটি করে পেয়ারা অবশ্যই রাখা উচিত। আমাদের পোস্টটি অর্থাৎ পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে পড়ে আপনি যদি একটুও উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আমাদের এই পোস্টটি আপনার বন্ধু, পরিবার ও পরিজনদের সাথে বেশি বেশি শেয়ার করুন যেন আপনার মত তারাও কিছুটা উপকৃত হতে পারে এবং আমাদের এই পোস্ট সম্পর্কে আপনাদের মতামত জানানোর জন্য আমাদের পোষ্টের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন।
ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url