স্ত্রী মশা ও পুরুষ মশার বিস্তারিত তথ্য সম্পর্কে জানুন

স্ত্রী মশা ও পুরুষ মশার বিস্তারিত তথ্য সম্পর্কে আমাদের আজকের এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে। আপনারা যদি স্ত্রী মশা ও পুরুষ মশার পার্থক্য ও মশা বাহিত বিভিন্ন রোগ, মশার বাসস্থান ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আজকের এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
স্ত্রী মশা ও পুরুষ মশার বিস্তারিত তথ্য সম্পর্কে জানুন
আমাদের চারপাশের পরিবেশে মশার উপদ্রব বেশ ভালোভাবে ছড়িয়ে আছে। মশার উপদ্রব এতই যে মশা বাহিত বিভিন্ন রোগও নিমিষেই ছড়িয়ে পড়ে। তাই চলুন এ বিষয়ে সচেতন হতে আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে মশা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিই।

ভূমিকা

স্ত্রী মশা ও পুরুষ মশার বিস্তারিত তথ্য জানতে হলে অবশ্যই সর্বপ্রথম মশা সম্পর্কে জানতে হবে। তাহলে চলুন আজকের এই বিস্তারিত আলোচনায় আমরা জানবো মশার ধরন, মশার বংশ বিস্তার, মশার আয়ু কত দিন, মশার কানের কাছে গুঞ্জন করার কারণ এবং মশার বাসস্থান সম্পর্কে।

মশার ধরন

প্রাণী জগতের সবচেয়ে বড় আর্থ্রোপোডা। এ পর্বের এর অন্তর্ভুক্ত প্রাণী হলো মশা। মশার জাত ভেদে সারা বিশ্বে প্রায় সাড়ে তিন হাজারের বেশি জাতের মশা রয়েছে। তবে দেশভেদে সংখ্যাটা বৃদ্ধি পেলেও পাঁচেকের বেশি নয়। বাংলাদেশে ১২৩ প্রজাতির এবং যুক্তরাষ্ট্রের দুই শতাধিক প্রজাতির মশা রয়েছে।
এর মধ্যে সব মশাই যে ক্ষতি করে এমনটা নয় যেমন ১২৩ প্রজাতির মশার মধ্যে শুধুমাত্র 22 প্রজাতির মশার রোগ ছড়ায়। জেনে রাখা ভালো মশা শুধু মানুষের শরীরের রক্তই পান করে এমন না বরং ধরনভেদে সাধ ও বৈশিষ্ট্য ভেদে অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর রক্তেও ভাগ বসায়। যেমন, বেশ কিছু মাছের শরীর থেকেও রক্ত শোষে। মশার বিভিন্ন ধরনের মধ্যে রয়েছে মেরুদন্ডী, স্তন্যপায়ী, সরীসৃপ, উভচর ইত্যাদি।

মশা ক্রেন মাছের অন্তর্ভুক্ত এক পতঙ্গ বিধানের ভাষায় নেমাটোসেরা নামে পরিচিত। কিছু প্রজাতির শ্রী মশা রক্ত শোষণ করে যা মশা বাহিত বিভিন্ন রোগ সংক্রমণ বিস্তার করতে পারে যেমন ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, ফাইলেরিয়া, জিকা ভাইরাস, পীতজ্বর ইত্যাদি। মশার রক্ত শোষণকারী প্রজাতির মধ্যে শুধু শ্রী মশা রক্ত শোষণ করে। কিছু মশা নিয়মিতই মানুষকে কামড়ায় যা বছরে লক্ষাধিক মানুষের শরীরে জীবাণু সংক্রমণের বাহক হিসেবে কাজ করে।

বাসস্থান থেকে উৎখাত হওয়া মশা বেশ ক্ষতিকর। মানবদেহে স্থান না করলেও প্রাণীদের শরীরে রোগ সংক্রমণের চলক হিসেবে গণ্য হয়। স্ত্রী মশা ও পুরুষ মশার পার্থক্য হলো কি মশা রক্ত শোষণকারী ও রোগ বহনকারী। সাধারণ মহলের ব্যাপকভাবে পরিচিত মশা বাহিত বিভিন্ন রোগ সংক্রমনের জন্য এডিস, কিউলেক্স, অ্যানোফিলিক্স, হেমাগোসাস প্রজাতির মশা নানা ধরনের রোগ জীবাণুর বাহক হিসেবে দায়ী।

স্ত্রী মশা ও পুরুষ মশার বিস্তারিত পার্থক্য

স্ত্রী মশা ও পুরুষ মশার পার্থক্য জানার জন্য এদের ব্যাপারে পৃথকভাবে জানা জরুরী। আমাদের জানা আছে যে অধিকাংশ প্রজাতির মশা আছে যার মধ্যে কিছু মশা মেরুদণ্ড প্রাণীর, স্তন্যপায়ী প্রাণী, সরীসৃপ প্রাণী, উভচর প্রাণী এমনকি কখনো কখনো মাছের শরীর থেকেও রক্ত শোষণ করে থাকে। হবে কোন মশা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর এবং কোন মশা থেকে কোন প্রভাব নেই তা জানার জন্য স্ত্রী মশা ও পুরুষ মশার পার্থক্য করে নির্ধারণ করা হয়। নিম্নে স্ত্রী মশা ও পুরুষ মশার পার্থক্য সংক্ষিপ্ত ভাবে উল্লেখ করা হলো :
  • সচরাচর স্ত্রী মশা ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের সময় নিয়ে পৃথিবীর বুকে আসে। অন্যদিকে পুরুষ মশা একদিন বাঁচে এ ক্ষেত্রে পুরুষ মশা একদিনের বেশি বাচলেও তাদের পরিস্থিতি একেবারেই নাজুক হয়ে পড়ে।
  • পুরুষ মশা শুধুমাত্র উদ্ভিদের রস খেয়ে বেঁচে থাকে কিন্তু স্ত্রী মশা প্রাণীদেহে রক্ত শোষণ করে। বলা যায় স্ত্রী মশা মানুষের মতো হোস্টের খোঁজে থাকে তাদের রক্ত পান করে কারণ ডিম বিকাশের জন্যই স্ত্রী মশার রক্ত থেকে প্রোটিন প্রয়োজন।
  • যেহেতু পুরুষ মশা শুধুমাত্র উদ্ভিদের উপর নির্ভরশীল তাই তারা রোগ ছড়াতে পারে না কিন্তু, মশা বাহিত বিভিন্ন রোগ খাবারের সাথে বহন করে থাকে এবং তা ও প্রাণীদেহে ছড়িয়ে দেয় যা কিছু কিছু ক্ষেত্রে মারাত্মক সংক্রমণ রোগ হিসেবেও প্রমাণিত হয়েছে।
  • স্ত্রী মশা পুরুষ মশার তুলনায় বড়।
  • স্ত্রী মশা ও পুরুষ মশার পার্থক্য হিসেবে আরও একটি বাক্য যুক্ত করা যায় যে, স্ত্রী মশার একটি সূঁচের মত প্রবেসিস থাকে যা তারা কামড়ানোর কাজে ব্যবহার করে। অন্যদিকে পুরুষ মশার প্রবেসিস সূঁচের মতো খাড়া হয় না তবে কিছুটা বাঁকা হয়।
  • পুরুষ মশার অ্যান্টিনা সাধারণত গুল্মযুক্ত ও লোমযুক্ত হয় যেখানে স্ত্রী মশার অ্যান্টিনা হয় খুব কম লোমযুক্ত।

মশার বংশ বিস্তার

মশার বংশ বিস্তার পদ্ধতি তুলনামূলক ভাবে এক সহজ প্রক্রিয়া। মশার জীবনচক্র - ডিম, শূককীট, মুককীট এবং পূর্ণাঙ্গ, এই চারটি পর্যায়ে বিভক্ত। বিজ্ঞানের মতে, স্ত্রী মশা রক্ত খেয়ে থাকে। বংশ বিস্তারের প্রক্রিয়ায় ডিম বিকাশের জন্য স্ত্রী মশা রক্ত থেকে প্রোটিন সংগ্রহ করে। প্রাণীদেহে রক্ত শোষণ করে স্ত্রী মশা প্রজনন প্রক্রিয়া ঘটায়।
প্রায় বেশির ভাগ প্রজাতির স্ত্রী মশা জলাশয় কিংবা বদ্ধ পানিতে ডিম পাড়ে। আবার কিছু প্রজাতির মশা আছে যারা পানির কাছাকাছি ডিম পাড়তে পছন্দ করে এবং অন্যান্য গুলো জলজ উদ্ভিদে গিয়ে ডিম পাড়ে। আবার কিছু মশা হ্রদে ডিম ছাড়ে, কিছু মশা সাময়িক ডোবায় ডিম ছাড়ে এবং কিছু জলাভূমিতে আবার কিছু মশা লবণাক্ত জলাভূমিতে ডিম ছাড়ে।

ইন্টারনেটের তথ্য অনুযায়ী জানা যায় প্রজাতি অনুযায়ী মশার ডিম পাড়ার ধরনের মধ্যে অনেক রকমের ভিন্নতা রয়েছে। তার মধ্যে অ্যানোফিলিসিস প্রজাতি সবচেয়ে সহজ পদ্ধতিতে পানির উপরে নিচে উড়াউড়ি করে এবং পানিতে ডিম ছাড়ে। একটি পূর্ণাঙ্গ স্ত্রী মশা তার জীবনকালে ১০০ থেলে ২০০ ডিম দিতে পারে।

এই ডিম ফুটে লার্ভা হয় এবং লার্ভা থেকে পিউপা হয় এবং পরবর্তীতে পিউপা থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ মশা উৎপন্ন হয়। মশা বাইরে থেকে বাড়িতে প্রবেশ করে কিছু কিছু ভিন্ন পরিস্থিতিতে বাড়িতেও ডিম পাড়া শুরু করতে পারে। প্রাপ্ত বয়স্ক পূর্ণাঙ্গ বয়স্ক হওয়ার পর প্রায় 24 ঘন্টা পরে একটি মশার প্রজনন ঘটে। বলা হয় একটি মশা একবার সঙ্গম করলে সেটি তার বাকি জীবনকালে ডিম দিয়ে যেতে পারে। সাধারণত স্থির বা স্বচ্ছ জলের মধ্যেও মশা বংশবিস্তার করতে পারে।

মশার আয়ু কত দিন

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গিয়েছে যে, প্রাপ্তবয়স্ক মশার প্রজাতি অর্থাৎ একটি পূর্ণাঙ্গ মশা সাধারণত আদ্রতা, তাপমাত্রা এবং অন্যান্য কারণ এর উপর নির্ভর করে দুই থেকে চার সপ্তাহ বেঁচে থাকতে পারে। আরো বলা হয় যে স্ত্রী মশা সাধারণত পুরুষ মশার চেয়ে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে।

মশা বাহিত বিভিন্ন রোগ মানবদেহে সংক্রমণের জন্য স্ত্রী মশার সেই রোগের জীবাণুর বাহক হিসেবে কাজ করে। সাধারণ ভাবে ক্যালকুলেশনে দেখা গিয়েছে স্ত্রী মশা তার বহিঃপ্রকাশ থেকে পূর্ণাঙ্গ সময় সবকিছু মিলিয়ে সচরাচর ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। পুরুষ মশার জীবন কাল মাত্র একদিন তবে মশা একদিনের বেশিও বাঁচতে পারে কিন্তু তখন তাদের পরিস্থিতি একেবারেই দুর্বল হয়ে পড়ে। এই ক্ষুদ্র প্রজাতির পতঙ্গ দীর্ঘ ২৫০০ বছর ধরে পৃথিবীর বুকে টিকে আছে।

মশা বাহিত বিভিন্ন রোগ

সারা বিশ্বের প্রায় সাড়ে তিন হাজার প্রজাতির মশার মধ্যে মত মাত্র ১০০ টির মতো প্রজাতি মশা বাহিত বিভিন্ন রোগ ছড়ায়। বিভিন্ন গবেষণায় জানা গিয়েছে মশা থেকে ২০টির মতো রোগ ছড়ায়। বিশ্বে অন্যান্য কীটপতঙ্গের আক্রমণে প্রতিবছর যত মানুষ মারা যায় তার মধ্যে এই রোগে মারা যাওয়ার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এই রোগের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ২০শে আগস্টে প্রতি বছর বিশ্ব মশা দিবস পালিত হয়।

গবেষকদের মতে, বাংলাদেশের ১২৩ প্রজাতির মশার মধ্যে ২২ প্রজাতির বিভিন্ন মশা বাহিত রোগ সংক্রমণ করে এবং ১৪টি প্রজাতির মশা ঢাকাতেই পাওয়া যায়। এ সকল রোগ এর মধ্যে উল্লেখ্য হলো ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া, চিকনগুনিয়া এবং জাপানিস এনসেফালাইটিস। নিম্নে মশা বাহিত বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো।

ডেঙ্গুঃ ডেঙ্গু হচ্ছে এমন একটি ভাইরাস সংক্রান্ত সমস্যা যা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর বা সমস্যার একটি কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এটি সাধারনত এডিস মশার মাধ্যমে মানুষের শরীরে ছড়ায়। ডেঙ্গুর লক্ষণগুলির মধ্যে সাধারণত সবচেয়ে বেশি দেখা যায় অনেক বেশি জ্বর, মাথা ব্যথা, মাংসপেশিতে ব্যথা, পেটের তীব্র, যন্ত্রণা বমি বমি ভাব হওয়া। এই রোগ সাধারণত বর্ষাকালে সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। এবং এই জ্বর সেড়ে যাওয়ার পরেও পাঁচ - ছয় দিন পর্যন্ত সম্পূর্ণ শরীর জুড়ে প্রচন্ড পরিমাণে ব্যথা এবং সারা শরীরে ঘামাচির মত লাল লাল দানা দেখা যায়।

ম্যালেরিয়াঃ ম্যালেরিয়া  রোগের জীবাণু বহন করে অ্যানোফিলিস নামক স্ত্রী মশা। তবে জেনে রাখা প্রয়োজনীয় যে, এর মধ্যেও প্রজাতির ভিন্নতা রয়েছে। অর্থাৎ ৩৬ প্রজাতির অ্যানোফিলিস নামক মশা বাংলাদেশের পাওয়া যায় যার মধ্যে ম্যালেরিয়ার রোগের বাহক হিসেবে কাজ সম্পন্ন করে থাকে সাত রকমের প্রজাতির এনোফিলিস মশা। সাধারণত পার্বত্য ও সীমান্ত এলাকাতে এবং গ্রীষ্মকালে ম্যালেরিয়ার রোগের প্রকোপ দেখা দেয়।

ফাইলেরিয়াঃ মূলত কিউলেক্স নামক মশার দুটি প্রজাতি হচ্ছে ফাইলেরিয়া জীবাণুর বাহক। সাধারণত এই রোগে মানুষের হাত-পা এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ অস্বাভাবিকভাবে ফুলে ওঠে যেটি স্থানীয়ভাবে গোদ রোগ নামে পরিচিত। তাই বলা যায়, মূলত এসবই হচ্ছে ফাইলেরিয়া রোগের মূল লক্ষণ।

চিকুনগুনিয়াঃ সাধারণত চিকুনগুনিয়া রোগ ছড়ানোর মূল কারণ হচ্ছে এডিস মশা। সাধারণ ভাইরাস অথবা ফিভারের মতোই হয়ে থাকে এর লক্ষণ সমূহ। যেমন - সর্দি-কাশি জ্বর মাথা ব্যথা বমি বমি ভাব দুর্বলতা  সম্পূর্ণ শরীরের হাড়ে এবং মাংসে প্রচন্ড পরিমাণে ব্যথা, কখনো কখনো জয়েন্টেও তীব্র ব্যথা দেখা দেয় এবং সাথে প্রচুর পরিমাণে দুর্বলতা অনুভূত হয়। তবে চিকুনগুনিয়া হলে সাধারণত চার থেকে পাঁচদিনের মধ্যেই রোগী সুস্থতা অনুভব করে। বলা যায় চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে চিকুনগুনিয়া রোগ সেরে যায়।

জাপানিজ এনসেফালাইটিসঃ কিউলেক্স জাপানিজ এনসেফালাইটিস এই রোগের নামটি হয়তো অনেকেরই অজানা। তবে এই রোগ ছড়ানোর মূল দায়িত্ব হচ্ছে কিউলেক্স নামক মশার। যদিও বা এর বাহক হিসেবে ভূমিকা পালন করে থাকে এডিস মশা। সাধারণত এই রোগ মানবদেহে সংক্রমিত হওয়ার পর শুপ্ত অবস্থায় থাকে ৭ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত। জাপানিজ এনসেফালাইটিস এর মূল লক্ষণ হচ্ছে জ্বর এবং শরীরে তীব্র ব্যথা। যদিও বা এ রোগে তিন থেকে চার দিনের মধ্যেই সুস্থতার আশা করা যায়।

মশার কানের কাছে গান গাওয়ার কারণ

মশার কানের কাছে গান গাওয়ার কারণ এ বা গুনগুন করার কারনে কম-বেশি আমরা সবাই প্রায় বিরক্ত। বিশেষজ্ঞদের মতে কিউলেক্স প্রজাতির বড় আকারের মশাগুলো বাড়িতে অবস্থান করে যা ক্ষেত্রে বাড়ির দেয়ালে বসে থাকে। কিউলেক্স মশা মানুষের রক্ত খায় না। এরা পুরুষ মশা যারা গাছের পাতার রস বা ফুলের রেনু থেকে প্রয়োজনীয় খাদ্য সংগ্রহ করে।

তবে মানুষের শরীর থেকে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইডের কারণে এই কার্বন ডাই অক্সাইডের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে মেয়ে এবং পুরুষ উভয় মশাকে মানুষের কানের আশেপাশে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। আমাদের শরীর থেকে সবচেয়ে বেশি নাকে ঠিক পেছনে অর্থাৎ কানের বা মাথার পিছন দিক থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়।

তাই মশা বেশিরভাগ কান ও মাথার কাছাকাছি ঘোরাফেরা করে। নির্গত হওয়া কার্বন ডাই অক্সাইড দিয়ে মশারা সেই ঘরে প্রাণীর সংখ্যা অনুমান করে নেয়। আবার, মশার ডানা ঝাপটানোর গতি প্রতি সেকেন্ডে ২০ থেকে ২০ হাজার বার হয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞরা এমনও বলেন যে প্রতি সেকেন্ডে মশা ত্রিশ হাজার বার ডানা ঝাপটা দেয় যা আমাদের কানে মশার গান হিসেবে অসহনীয় বলে মনে হয়।
সঠিকভাবে বলতে গেলে বলতে হবে যে, মশার ডানা ঝাপটানোর সময় যে আওয়াজটা হয় সে আওয়াজকে মূলত আমরা গান বলে মনে করি। তাছাড়াও মানুষের চুলের সুগন্ধি বা হেয়ার জেল এর জন্য মশা, মাথার দিকে আকর্ষিত হয়ে তার আশেপাশে ঘুরতে থাকে যার ফলে আমরা তাদের শব্দ শুনতে পাই 

মশার বাসস্থান

বেশিরভাগ যে কোন প্রজাতিরই পূর্ণাঙ্গ স্ত্রী মশা জলাশয় বা বদ্ধ পানিতে তাদের ডিম ছাড়ে এবং ডিম থেকে সেখানেই মশার শুককীট-মুককীট এবং তার পর পূর্ণাঙ্গ মশা জন্ম নেয় যার ফলে সেই জলাশয় বা বদ্ধপানির স্থানই তাদের বাসস্থান হিসেবে গণ্য হয়।

এছাড়াও কিছু মশা ব্যতিক্রম হিসেবে বাড়িতে কিংবা পানির কাছাকাছি, জলজ উদ্ভিদে, ডোবায়, লবণাক্ত পানিতে ইত্যাদি জায়গায় মশার বাসস্থান লক্ষ্য করা যায়। তবে প্রতিকূল পরিবেশের ক্ষেত্রে এডিস মশা অল্প পানিতে ডিম পারে ও সেখানেই থাকতে পারে যেমন ৫ মিলি বা এক চামচ পানির মধ্যেও এডিস মশা তাদের বংশবিস্তার করতে পারে।

লেখক এর মন্তব্য

আশা করি মশার বিস্তারিত আলোচনামূলক এই পোস্টের মাধ্যমে আপনারা নতুন অনেক কিছু  সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন থাকে বা কোন মতামত জানাতে চান তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন এবং পোস্টটি শেয়ার করে আপনার আশেপাশের মানুষকে মশা সম্পর্কে তথ্য ও সচেতনতা বৃদ্ধির ব্যাপারে জানার সুযোগ করে দিন।
ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url