অতিরিক্ত চুল পড়া কিসের লক্ষণ বিস্তারিত তথ্য জানুন
অতিরিক্ত চুল পড়া কিসের লক্ষণ এবং অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার এবং কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যায় এর সম্পর্কে আমাদের আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব। এখনো পর্যন্ত অতিরিক্ত চুল পড়ার সঠিক কারণ অনেকেই উদঘাটন করতে পারেননি। আপনি যদি এই বিষয়ে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে সবগুলো পোস্ট সহকারে পড়ে চুল পড়ার বিস্তারিত তথ্য সম্পর্কে আপনি জানতে পারবেন।
চুলের যত্নে আমরা প্রতিনিয়ত অনেক রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকলেও চুল পড়া থামাতে পারিনা। একটি স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্য অতিরিক্ত চুল পড়া কিসের লক্ষণ, এর প্রতিকার এবং কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যায় তা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যার সর্বোচ্চ তথ্য আজ এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করব।
ভূমিকা
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চুল পড়ে যাওয়া এমন সমস্যা যা আমাদের আত্ম উপলব্ধি আত্মবিশ্বাস এর রাস্তায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা বা দৈনুদ্দিন জীবনে আমাদের রুটিনের মধ্যের নানা ত্রুটির কারণে চুল পড়া সমস্যা দেখা দেয়। তাই আজকের পোস্টে আমরা জানবো অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ, অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার, মেয়েদের অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ এবং চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম সম্পর্কে।
অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ
বর্তমান সময় অল্প বয়সে চুল পড়া একটা সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ালেও এই ব্যাপারটিকে হালকা তে নেয়া উচিত না। বর্তমানে কিশোর কিশোরীদের এই চুল পড়ার সমস্যা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। একটি স্বাভাবিক জীবনযাপন এর মধ্যে একজন মানুষের মাথার চুল গড়ে ১০০ টির মতো করে পড়তে পারে। কিন্তু অল্প বয়সেই অর্থাৎ কিশোর কালে এই মাত্রাটি ছড়িয়ে গেলে এর কারণ উপলব্ধি করা খুবই জরুরী।
- অল্প বয়সে অতিরিক্ত চুল পড়ার অনেক রকম কারণ থাকতে পারে। তবে বিভিন্ন রকম কারণ এর মধ্যে পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব এর অন্যতম কারণ হতে পারে। শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে না পারলে বাহ্যিক দিক থেকে অনেক রকম বৈশাদৃশ্য দেখা যায় যার মধ্যে চুল পড়া একটি অন্যতম লক্ষণ। আমাদের চুলের জন্য দরকারি প্রোটিন এর বেশিরভাগই আমাদের খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে পৌঁছায়।
- যেমন ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই, বায়োটিন এবং খনিজ উপাদান যেমন জিংক ও আয়রন। এই পুষ্টিকর উপাদান গুলো আমাদের প্রায় নিয়মিত গ্রহণ করা উচিত। ডিমের কুসুম, কলিজা, মিষ্টি আলু, কলা, বাদাম, বিভিন্ন বীজ, মাশরুম ইত্যাদি চুলের জন্য দরকারি প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ খাদ্য। এই পুষ্টিগুলো নিয়মিত গ্রহণে আমাদের চুলের জন্য প্রয়োজনীয় রক্ত সঞ্চালন কবিতা বৃদ্ধি পাবে।
- এছাড়াও পর্যাপ্ত ঘুম এর অভাবে এবং বিভিন্ন রকম বিষাদগ্রস্থতা ও মানসিক চাপের জন্যেও চুল পড়া সমস্যা অতি খারাপ বেড়ে যায় যেটা বর্তমানে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে খুব বেশি হারে দেখা যায়। তবে অতিরিক্ত চুল পড়া কিসের লক্ষণ এটা জেনে রাখা ভবিষ্যতে সবার জন্যই উপকারী হতে পারে।
- থাইরয়েড জনিত সমস্যা হতে পারে অল্প বয়সে অতিরিক্ত চুল পড়ে যাওয়ার আরেকটি কারণ। থাইরয়েডের সমস্যা নতুন চুল গজাতে বাধা দেয় এবং অতিরিক্ত চুল পড়াও বাড়তে থাকে। এছাড়া জিনগত সমস্যার কারণেও অনেকের ক্ষেত্রে অল্প বয়সে চুল পড়ে যাওয়ার প্রবণতা লক্ষণীয়।
- নানারকম ব্যস্ততার কারণে বর্তমানে কিশোর বয়সে চুলের ত্বকের অত একটা সময় ব্যয় করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফলে নানা রকম সংক্রমণ দেখা দেয় যেমন চুলের ত্বকে ছত্রাকের সংক্রমণ সৃষ্টি হয়। এটিও অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণগুলির মধ্যে একটি।
- আজকাল চুলের রং করা বা ব্লিচ করা খুবই সাধারণ একটি ব্যাপার। তবে চুলের রং বা ব্লিচ করানোর জন্য যে রাসায়নিক পদার্থগুলো ব্যবহার করা হয় তা কতটুকু স্বাস্থ্য সম্মত বা ক্ষতিকর তা সম্পর্কে সঠিক ধারণা অর্জনের অভাবে চুল ঝরে যাওয়ার মতো সমস্যা উদ্ভব হয়।
- মাথার ত্বকের সাথে সামঞ্জস্য না রেখে যেকোনো শ্যাম্পু ব্যবহারের ফলে অনেক সময় সে আমাদের ত্বকে মানানসই হয় না। কিশোর কিশোরীর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই দিক বিবেচনা না করে যে কোনো রকম শ্যাম্পু ব্যবহার করা শুরু করে দেয় যা আমাদের চুলের গোড়া দুর্বল করতে সময় নেয় না। ফলে শুরু হয় চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা।
- চুলকে অতিরিক্ত জোরালোভাবে বা টান টান করে অথবা কঠিন হেয়ার স্টাইল গুলো ব্যবহারের ফলে চুলের ফলিকল গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে চুল সহজেই ভেজে যেতে শুরু করে এবং চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা অল্প বয়সেই শুরু হয়ে যায়।
- পিসিওএস বা পলিস্টিক ওভারি সিনড্রোম এ চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা খুবই কমন। পিসিএস আক্রান্ত থাকাকালীন অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যান্ড্রোজেনের উৎপাদন অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ।
মেয়েদের অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ
বিশেষজ্ঞদের মতে মেয়েদের চুল পড়ার সমস্যা অ্যান্ড্রোজেনেটিক অ্যালোপিসিয়া নামে পরিচিত। তবে মেয়েদের চুল পড়াকে ততক্ষণ পর্যন্ত অ্যাড্রোজেনেটিক অ্যালোপেসিয়া বলা যাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের চুল একজন স্বাভাবিক মানুষের মত দৈনিক গড়ে ১০০ টির মত করে ঝরছে। কেননা প্রতিদিন মানুষের মাথা থেকে একশটির মত বা এর চেয়ে খানিকটা বেশি চুল পড়ে যাওয়া প্রবণতাকে স্বাভাবিক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
তবে যখনই এই মাত্রা অতিক্রম হবে তখন এটি চুল পড়া সমস্যা হিসেবে বিবেচিত হবে। এই ধারাটি নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। মেয়েদের চুল পড়ার সমস্যাকে দুই ভাগে বিভক্ত করা যায় যেমন, অ্যানাজেন ইফফ্লুডিয়াম এবং টেলোজেন ইফফ্লুডিয়াম। চুলের ফলিকলের রেস্টিং পিরিয়ডে চুলের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে এটি ঝরে যেতে শুরু করে এবং একে টেলোজেন ইফফ্লুডিয়াম বলে এবং চিকিৎসা জনিত কারণে চুল পড়ে যাওয়া সমস্যা কে অ্যানাজেন ইফফ্লুডিয়াম বলে। মেয়েদের চুল পড়ে যাওয়ার কিছু কারণ গুলো হলো নিম্নরূপ।
- অতিরিক্ত মানসিক চাপ
- প্রতিদিনের অতিরিক্ত কর্মব্যস্ততা
- ডায়াবেটিস জড়িত সমস্যা
- থাইরয়েডের সমস্যা
- গর্ভাবস্থা কিংবা পরিবার পরিকল্পনার পিল সেবন
- পিসিওএস বা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম
- বিভিন্ন রকম শারীরিক অসুস্থতা যেমন- রক্তস্বল্পতা, ওজন বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া
- চিকিৎসা জনিত বিভিন্ন কারণে যেমন - অতিরিক্ত ওষুধ সেবন কিংবা অস্ত্র পাচার
- ঋতুস্রাব জড়িত সমস্যা
- অনিয়মিত ডায়েটের জন্য
মুত্রনালীর প্রদাহের জন্য এবং ইত্যাদি কারনে। এছাড়াও নিয়মিত পুষ্টির অভাবেও চুল পড়া সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং সঠিক শরীরচর্চার মাধ্যমে মেয়েদের চুল পড়ার সমস্যা কমিয়ে আনা সম্ভব।
অতিরিক্ত চুল পড়া কিসের লক্ষণ
অতিরিক্ত চুল পড়া বিভিন্ন রকম রোগের বৈশিষ্ট্য হতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিশেষজ্ঞরা জানান, স্বাস্থ্যের যত্নে সব দিকে নজর দেয়ার সাথে চুলের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে কখন এটি ঝড়ছে কি পরিমানে ঝরছে ইত্যাদি সম্পর্কে। চুলের অতিরিক্ত ঝরে যাওয়ার পরিমাণ দেখে যেকোনো রোগ আন্দাজ করা সম্ভব নয় তবে গুরুতর রোগের পূর্বাভাস হিসেবে নিজেকে বুঝিয়ে দিয়ে এর যত্নে সচেতন হওয়া দরকার।
অতিরিক্ত চুল পড়া কিসের লক্ষণ বলে যে কোন একটি রোগের নাম বলে দিয়ে এই বিষয়ের আলোচনা থামেনা। বিভিন্ন রকম অসুখ শরীরে যখন বাসা বাঁধতে শুরু করে তখন আমাদের চুল পড়ে যাওয়ার হার বৃদ্ধি পেতে থাকে। অতিরিক্ত চুল পড়া কিছু গুরুতর রোগের লক্ষণ হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করে যেমন।
লুপাস বা এসএলইঃ অতিরিক্ত চুল পড়া, মুখোমন্ডলের র্যাশ বা ঘা হওয়া, জ্বর ও ব্যথা অনুভব এ রোগের লক্ষণ। লুপাসে শরীরের কোষ কলা ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
পিসিওএস বা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমঃ হরমোনের অসামাঞ্জস্যতা পিসিওএস এর মূল কারণ। ফলে অনিয়মিত শারীরিক গতির ফলে মাথার চুল অতিরিক্ত পরিমাণে ঝরতে থাকে।
হাইপো থাইরয়েডিজমঃ থাইরয়েডির অনেকগুলো উপসর্গ আছে যা দৈনন্দিন জীবনকে বিভিন্ন দিক থেকে বাধাগ্রস্থ করে। তার মধ্যে চুল পড়া এবং অনিয়মিত ওজন এর মাত্রা অন্যতম। থাইরয়েডিজমের ফলে চুল অতিরিক্ত ঝরে পড়ে এবং চুল প্রচুর রুক্ষ হয়ে যায়।
হাইপার থাইরয়েডিজমঃ যেভাবে থাইরক্সিন হরমোন এর ঘাটতি দেখা দিলে চুল পড়তে পারে ঠিক সেই ভাবেই অতিরিক্ত মাত্রায় থাইরক্সাই হরমোন এর উপস্থিতিতে মাথার চুল অতিরিক্ত ঝরে পড়ে এবং চুল ভেঙ্গে পড়তে শুরু করে। হাইপার থাইরয়েডিজম এর আরো অন্যান্য উপসর্গ রয়েছে।
রক্তশূন্যতাঃ সাধারণত অপুষ্টি রক্তশূন্যতার অন্যতম কারণ। রক্তশূন্যতার লক্ষণ হিসেবে চুল পড়া, ফ্যাকাশে ভাব, দুর্বলতা, অবসাদ ইত্যাদি রয়েছে। অপুষ্টি ও দুর্বলতার চুল যেভাবে ঝরে পড়তে শুরু করে সেভাবেই চুল ভঙ্গুর হয়ে যায়।
মাথায় ডার্মাটাইটিসঃ মাথার ত্বকের বিভিন্ন রকম ইনফ্ল্যামারেটরি রোগের জন্য চুল পড়ার সাথে খুশকির মতো সমস্যা হয়।
অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার
অতিরিক্ত চুল পড়া সরাসরি শারীরিকভাবে দুর্বলতা বা অন্যান্য সমস্যা কি ইঙ্গিত করে। অতিরিক্ত চুল পড়ার অনেক রকমের কারণ রয়েছে।
পুষ্টির অভাবঃ পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবে প্রায়ই আমাদের শরীরে অনেক রকমের বাহ্যিক সমস্যা দেখা দেয় যা চোখে ফুটে ওঠার মত। পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি শরীরের না পৌঁছালে শরীরের নখ চুল এবং ত্বক ফ্যাকাসে ও দুর্বল রকমের হয়ে যায়। সাথেই চুল আরও পাতলা এবং নির্জীব হয়ে যায়। সঠিক পরিমাণে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ যেমন সঠিক পরিমাণে রঙিন সবজি ও ফল গ্রহণ করা উচিত।
এবং প্রোটিনের পরিমাণ খাবার থেকে বিলুপ্ত না হতে দেয়ার ফলে শরীর থেকে অপুষ্টি জনিত সমস্যা দূর করাও সম্ভব। এতে পুষ্টি জনিত কারণে চুল পড়ার সমস্যা প্রতিকার পাওয়া যেতে পারে। সাথে খাদ্য তালিকা অন্যান্য চর্বিযুক্ত খাবারও যোগ করা যেতে পারে এবং ভিটামিন ডি ও প্রয়োজনীয় যার অভাবে চুল সমস্যা উদ্ভব হয়।
দাঁতের জন্যঃ বিশেষজ্ঞদের মতে দাঁত মাড়ি ও চুল একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত। অর্থাৎ দাঁত এবং মাড়িতে সমস্যা হলে তা চুল পড়া সমস্যা পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে। দাঁতে কেভিটি বা অ্যানামালের সমস্যা থাকলে গোড়া থেকে চুল উঠে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে যা অ্যানাজেন হেয়ার সিনড্রোম নামে পরিচিত। পরিমিত সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এই সমস্যা সমাধান বের করা সম্ভব।
মানসিক দিকঃ অতিরিক্ত মানসিক চাপ এবং অবসাদ চুল পড়ে যাওয়ার অন্যতম একটি কারণ। বর্তমানে যারা অতিরিক্ত চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যায় ভুগছেন তাদের বেশিরভাগই মানসিক চাপে ভুগছেন। এছাড়াও গর্ব অবস্থায়, অতিরিক্ত ওষুধের সেবুন, চিকিৎসা চলমান স্থিতি, অতিরিক্ত চিন্তা ইত্যাদি কারণে মানসিক চাপ হয়ে থাকে যার ফলে আমাদের চুল অতিরিক্ত পরিমাণে ঝরতে থাকে। অতিরিক্ত চিন্তা রোধ এবং মানসিক চাপ কমানোর সঙ্গে সঙ্গে এর থেকে প্রতিকার পাওয়া সম্ভব।
থাইরয়েডজনিত কারণেঃ থাইরয়েড জনিত সমস্যা যেমন হাইপো থাইরয়েডিজম এবং হাইপার থাইরয়েডিজম উভয় কারণেই পরিমাণে চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা ঘটে। তাই অতিরিক্ত চুল পড়া কিসের লক্ষণ এর মতো প্রশ্নের উত্তরে চলিত সমস্যায় প্রথমে স্থান পায়। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান নিয়ে আসার চেষ্টা করা যেতে পারে।
টেস্টোস্টেরন হরমোনঃ মাথার তালুর চুল অতিরিক্ত পরিমাণে পড়ে যাওয়ার জন্য অতিরিক্ত পরিমানে টেস্টোস্টেরন এর উৎপাদন দায়ী। যেহেতু পেটের চর্বির জন্য টেস্টোস্টোরলের উৎপাদন বৃদ্ধি পায় তাই ওজন কমিয়ে আনা এই সমস্যায় কারণে চুল পড়া রোধের অন্যতম উপায়।
এছাড়াও বিভিন্ন রকম জন্মরোধক ঔষধ ও অন্যান্য শারীরিক সমস্যা চুল পড়ে যাওয়ার কারণ। তাই খেয়াল রাখতে হবে যেই কারণে চুল পড়ে যাচ্ছে স্বয়ং সেই কারণ এর বিরতি টেনে আনা।
চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম
চুল পড়ার সমস্যার জন্য নারিকেল তেল কমবেশি আমরা সবাই চিনি। শহরে গ্রামে সব জায়গায় সর্বপ্রথম নারিকেল তেলের কথাই উল্লেখ করা হয়। তবে সরাসরি তেল ব্যবহার না করে তেলের সঙ্গে কিছু প্রাকৃতিক উপাদানের মিশ্রণ ঘটিয়ে চুল পড়ার সমাধান বের করা হয়। যেমন নারিকেল তেল, ভৃঙ্গরাজ তেল, পেঁয়াজের রস, আমলকির তেল ইত্যাদি।
কারি পাতাও নারিকেল তেলের মিশ্রণঃ নারিকেল তেল হালকা গরম করে তার সাথে কারি পাতা বিষিয়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আসার পর চুলে হালকা হালকা করে মালিশ করে নিলে চুল পড়ার সমস্যা অনেকাংশে কমে যায়।
ভৃঙ্গরাজ তেলঃ সরাসরি ভৃঙ্গরাজ গাছ থেকে এই তেল প্রস্তুত করা হয়। এর মধ্যে থাকা ভিটামিন ই ম্যাগনেসিয়াম এবং লৌহ উপাদান চুলের ঝরে পড়া কমিয়ে চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং চুল কি করে তোলে গোড়া থেকে শক্ত ও মসৃণ। ভৃঙ্গরাজ তেলের সাথে নিম পাতা, ব্রাহমি ও আমলকি একসাথে মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করতে হবে।
পেঁয়াজের রস ও তেলঃ নারিকেল তেলের সঙ্গে পেঁয়াজের রস এবং আরো ভেষজ উপাদান যেমন গোলাপের সবার নির্যাস একত্রে মিশিয়ে চুলের গোড়ায় ব্যবহার করলে এটি চুল পড়া কমায় এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। পেঁয়াজে থাকা সালফার চুলে কোলাজানের মাত্রা বৃদ্ধি করে চুলের গোড়াকে শক্ত করে এবং চুল পড়া রোধ করে।
আমলকির তেলঃ আমলকিতে বিদ্যমান ভিটামিন সি ও এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান আমাদের মাথার চুল পড়া কমায় এবং গোড়া থেকে মজবুত করে চুলের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমলকির পেস্ট এর সঙ্গে নারিকেল তেল মিশিয়ে এটি বেশি ব্যবহার করা হয়।
কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যায়
চুল পড়ার কারণ অনেকগুলো ভিটামিনের ঘাটতিতে হলেও শেষ ভাবে বারোটিন অর্থাৎ ভিটামিন বি সমৃদ্ধ কেই দায়ী ধরা হয়। এছাড়াও ভিটামিন এ এর অভাবে অতিরিক্ত চুল পরে। আরো রয়েছে ভিটামিন ডি এর অভাব এবং ভিটামিন ই এর ঘাটতি। বিশেষ করে ভিটামিন বি এর ক্ষেত্রে ভিটামিন বি 7 বা বায়োটিন, ভিটামিন বি ১২ এর অভাবে চুল পড়ে যায়। চুলের বৃদ্ধি এবং গোরা মজবুত করে চুলকে শক্তিশালী করতে ভিটামিন বি এর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন বি এর অভাবে চুল পাতলা হয়ে যায় হলে সহজেই দুর্বলতা ধরে দেয় এবং ধরতে শুরু করে। ভিটামিন ই এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদানের অভাবে চুল পড়ে যায়। মোটকথা চুলের জন্য অপরিহার্য সকল ভিটাবিদের মধ্যে বিশেষ করে ভিটামিন বি ১২ এবং বায়োটিনের অভাবের জন্য চুল বেশি পরিমাণে ঝরে পড়ে।
লেখক এর মন্তব্য
উপরোক্ত আলোচনা সাপেক্ষে উপলব্ধ করা যায়, চুলের যত্নে আমাদের দৈনন্দিন জীবন কতটা পরিমাণে জড়িত। আশা করছি চুলের ঝরে পড়ার বিষয়বস্তু নিয়ে এই পোস্টের মাধ্যমে অতিরিক্ত চুল পড়া কিসের লক্ষণ এবং কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যায় ইত্যাদি সম্পর্কে পড়ে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। এই পোস্টের মাধ্যমে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার গুরুত্বপূর্ণ মতামত আমাদের সাথে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাবেন এবং আপনার পরিবার ও পরিজনদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করে আমাদের পাশে থাকবেন।
ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url