অ্যালোভেরার ঔষধি গুন এবং বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে জানুন

অ্যালোভেরার ঔষধি গুন এবং বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের আজকের এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। পাশাপাশি রূপচর্চায় অ্যালোভেরার উপকারিতার তুলনা নেই। এছাড়া অ্যালোভেরা চুলের যত্নেও খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বজায় রাখে। আমাদের আজকের এই পোস্টের সাথে থাকুন যেনো অ্যালোভেরা সম্পর্কিত অন্যান্য তথ্য জানতে পারেন।
অ্যালোভেরার-ঔষধি-গুন-এবং-বিভিন্ন-উপকারিতা-সম্পর্কে-জানুন
আপনি যদি অ্যালোভেরার ঔষধি গুন এবং বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হন তাহলে আমাদের এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আশা করি আমাদের এই অ্যালোভেরা সম্পর্কিত পোস্ট এর মাধ্যমে অ্যালোভেরা সম্পর্কে নতুন অনেক কিছু জানতে পারবেন।

ভূমিকা

ঔষধি গাছের মধ্যে লিলি প্রজাতির একটি উদ্ভিদ হলো অ্যালোভেরা যা চুল সম্পর্কিত বহু ধরনের সমস্যা দূর করতে সহায়ক। আমরা অনেকেই আমাদের নিত্যদিনের প্রয়োজনে অ্যালোভেরার ব্যবহার বিভিন্ন ক্ষেত্রে করে থাকি, তবে এর ঔষধি গুণ সম্পর্কে কি আমরা বিস্তারিত জানি? চলুন আজকে জেনে নিই অ্যালোভেরা কি, অ্যালোভেরার উপকারিতা, রূপচর্চায় অ্যালোভেরার উপকারিতা, চুলের যত্নে অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অ্যালোভেরা তেলের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

অ্যালোভেরা কি

সাধারণত শুষ্ক জলবায়ু ঘেরা আবহাওয়ার মধ্যেই অ্যালোভেরার চাষ ভালো হয় তাই বাংলাদেশ, ভারত, আফ্রিকার মত অন্যান্য শুষ্ক জলবায়ু সমৃদ্ধ অঞ্চলে হ্যালো প্রজাতি জন্ম নেয়। উদ্ভিদ জগতে এই এলো পরিবারে প্রায় ৪২০ টির মত বিভিন্ন প্রজাতির এলো উদ্ভিদ রয়েছে। এর মধ্যে আলো প্রজাতির বেশিরভাগ উদ্ভিদ দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে দেখা যায়। অ্যালোভেরার ঔষধি গুন এবং বিভিন্ন উপকারিতার জন্য এটি প্রায় সর্বত্রই খুব বেশী জনপ্রিয়।

অ্যালোভেরা গাছটি ৩০ থেকে ৬০ সেন্টি মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে এবং ৬০ থেকে ৯০ সেন্টি মিটার পর্যন্ত এর চওড়া বৃদ্ধি পেতে পারে। অ্যালোভেরা গাছের উচ্চতা ও চওড়া এটি পাতার উচ্চতার সাথে জড়িত থাকে এবং স্বাভাবিক অবস্থায় এটি ৯০ সেন্টি মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়াও অ্যালোভেরা বহু ভিটামিনস ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ একটি উদ্ভিদ। প্রায় ১৪০ প্রজাতির এলো উদ্ভিদের মধ্যে এলো বার্বাডেনসিস বা অ্যালোভেরা শীর্ষে অবস্থান করে নিয়েছে।

অ্যালোভেরার বৈজ্ঞানিক নাম

ঔষধি গুন সম্পন্ন এক বহুজীবী ভেষজ উদ্ভিদের নামই অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী। অ্যালোভেরার বৈজ্ঞানিক নাম 'Aloe vera' এবং এর ইংরেজি নাম 'Medicinal aloe, Burn plant'। অ্যালোভেরা 'এলো' পরিবারের এমন এক ভেষজ উদ্ভিদ যা দূর থেকে দেখতে ক্যাকটাসের মতো লাগলেও এটি ক্যাকটাসের মতো ধারালো ও সুঁচযুক্ত নয়। অ্যালোভেরার আকৃতি দেখতে কিছুটা ফণী মনসা গাছ বা আনারস গাছের মতো কাটাযুক্ত।

অ্যালোভেরার ঔষধি গুন এবং বিভিন্ন উপকারিতা

এটি এমন একটি ভেষজ যার গুণগাণ যত করা যায় ততই কম মনে হবে। কারণ মানব দেহের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো এসিডের প্রায় অনেকগুলি অ্যালোভেরার মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে।  অ্যালোভেরা একটি এমন ভেসজ উদ্ভিদ যার ঔষধি গুন এর বাহার রয়েছে। সাধারণভাবেই যদি বলা যায় অ্যালোভেরার পুষ্টিগুণ অনেকগুলো যেমন প্রায় ২০ ধরনের খনিজ উপাদান এর অস্তিত্বই অ্যালোভেরার মধ্যে পাওয়া যায়।

এ উদ্ভিদ বিভিন্ন ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ তাই এর ব্যবহার ও সেবনের ফলে আমাদের শরীর, ত্বক এবং চুল মজবুত হয়ে ওঠে। অ্যালোভেরার ঔষধি গুন এবং বিভিন্ন উপকারিতার জন্য আমাদের স্বাস্থ্য, গড়ন ও জীবন যাত্রার মানকে ইতিবাচক দিকে অনেক গুনে বাড়িয়ে দেয়।

অ্যালোভেরা পান করে কিংবা অন্যত্র মাধ্যমে ব্যবহার করে অর্থাৎ যেকোন উপায়ে এলোভেরা থেকে এর পুষ্টিগুণ আমরা আমাদের মধ্যে নিঃসরণ করতে পারি। তাছারা অ্যালোভেরা একটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বিহীন প্রাকৃতিক উদ্ভিদ। নিম্নে এর ঔষধি গুন এবং এর বিভিন্ন উপকারিতা সপর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।

অ্যালোভেরার ঔষধি গুন

অ্যালোভেরাতে রয়েছে ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ উপাদান। অ্যালোভেরায় ঢাকা ভিটামিন গুলো হলো ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২, ভিটামিন বি৩, ভিটামিন বি৬ এবং ভিটামিন বি১২। এছাড়াও অ্যালোভেরাতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্লোরিন, জিংক, ক্রোমিয়াম, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, ফলিক এসিড, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান ও ল্যাকটেটিভ উপাদান সহ মোট ২০ ধরনের খনিজ উপাদান।

শুধু ত্বক, চুল এবং অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্যের জন্যই সীমাবদ্ধ নয় বরং মানসিক স্বাস্থ্য ও বিষাদ মনোভাব দূর করার সাথে ত্বকের বিভিন্ন রকম ক্ষত গভীরভাবে নিরাময় করার জন্য অ্যালোভেরার ঔষধি গুণ এর বিকল্প নেই। এবার আসি অ্যালোভেরার মাধ্যমে আমাদের কি কি ঔষধি গুনাগুন বা ফল লাভ হয় তার আলোচনায়।

  • বিগত প্যারায় আমরা জেনেছি অ্যালোভেরাতে ল্যাকটেটিভ উপাদান রয়েছে।
  • এটি আমাদের পেটের পরিপাক কাজে সাহায্য করে অর্থাৎ অ্যালোভেরা আমাদের পেট পরিষ্কার করে আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
  • অ্যালোভেরার জুস পান করলে আমাদের দেহ সতেজ হয়ে যায় এবং সকল ক্লান্তি ভাব দূর হয়ে যায় ফলে দেহের সকল ক্ষতিকর পদার্থ প্রবেশ বাধা প্রাপ্ত হয় এবং দেহ থেকে ক্ষতিকর পদার্থ অপসরণে অ্যালোভেরা সাহায্য করে।
  • নিয়মিত অ্যালোভেরা পানে মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
  • যেহেতু অ্যালোভেরা ২০ ধরনের খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ তাই অ্যালোভেরা সেবনে আমাদের দেহের খনিজ উপাদান ও ভিটামিনের ঘাটতি অনেকাংশে পূরণ হয় এবং আমাদের দেহে শক্তি সঞ্চালিত হয়।
  • অ্যালোভেরা নিয়মিত সেবনের ফলে মানুষের বিষাদগ্রস্থ থাকা মনোভাব দূর হতে পারে।
  • বিভিন্ন ধরনের ক্ষত ও চর্মরোগ সারাতে, যেমন কোন কারনে হওয়া ঘা কিংবা মেছতা থেকে মুক্তি পেতে অ্যালোভেরা সাহায্য করে।
  • ব্রণের দাগ ও যেকোনো ক্ষত থেকে উদ্ভব হওয়া দাগ থেকে ত্বককে পরিষ্কার রাখতে অ্যালোভেরা চরম ভূমিকা পালন করে।
  • অ্যালোভেরার রস আমাদের শরীরকে প্রচুর পরিমাণে হাইড্রেটেড রাখে।
  • অ্যালোভেরা আমাদের রক্তে সাদা ব্লাড সেল গড়ে তোলে।
  • অ্যালোভেরাতে উপস্থিত অ্যান্টি ইনফ্ল্যামাটরি উপাদান কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই মানব দেহের মেদ দূর করতে সাহায্য করে।
  • অ্যালোভেরা উচ্চ রক্তচাপ এবং নিম্ন রক্তচাপ উভয়কে নিয়ন্ত্রণে রেখে মানবদেহের রক্তে কোলেস্টেরল এর মাত্রা স্বাভাবিক করে তুলতে সাহায্য করে।
  • অ্যালোভেরা মানবদেহের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম।
  • এছাড়াও অ্যালোভেরার বাহ্যিক কিছু ঔষধি উপকারিতা হলো এটি ত্বক ও চুলের জন্য অনেক উপকারী একটি উপাদান, তাইতো রূপচর্চায় এর ব্যবহার অনেক ক্ষেত্রে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। চুলের যত্নে যেমন চুলের গোড়া মজবুত ও মসৃণ করা থেকে নিয়ে সকল রকম সমস্যার নিরাময়ের জন্য এর ঔষধি গুনসমূহ বড় ধরনের ভুমিকা পালন করে।

অ্যালোভেরার বিভিন্ন উপকারিতা

বিভিন্ন উপকারিতা সম্পন্ন এক প্রাকৃতিক উদ্ভিদ হল এই অ্যালোভেরা। চিকিৎসা ক্ষেত্র থেকে নিয়ে রূপচর্চা পর্যন্ত অ্যালোভেরার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অ্যালোভেরার ঔষধি গুন এবং বিভিন্ন উপকারিতার জন্য মূলত অ্যালোভেরার পাতার মধ্যে থাকা স্থিতিস্থাপক তরল বা আঠালো অংশটাই দায়ী।

মানব জীবনে অ্যালোভেরা অনেক অংশে উপকারী ভূমিকা পালন করে থাকে যেমন জালা, কাটা, চোখের রোগ নিরাময়ে, ব্রণ, চোখে নিচের দাগ বা ডার্ক সার্কেল সরাতে, ত্বকে ঘটা বিভিন্ন রকম সমস্যা বা ঘা, চুলের যত্নে রূপচর্চায়, দুর্বলতা কাটাতে, শরীরের শুষ্ক ভাব দূর করতে এবং শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে ইত্যাদি ক্ষেত্রে।

  • বিশেষ করে ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে এবং জ্বালা-পোড়া বা কাটা বা রূপচর্চার ক্ষেত্রেই অ্যালোভেরার ব্যবহার বেশি লক্ষণীয় হয়ে থাকে।
  • ডায়াবেটিসের প্রাকৃতিক নিরাময়ে সরাসরি অ্যালোভেরা বা অ্যালোভেরা দিয়ে তৈরি পানিও বা জুস গ্রহণের উপকারিতা রয়েছে।
  • আমাদের দেহের শক্তি সঞ্চালনের অ্যালোভেরার অনেক উপকারিতা রয়েছে।
  • ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে ও ত্বকের বিভিন্ন রকম জ্বালা-পোড়া, কাটা ও এলার্জি জনিত সমস্যা নিরাময়ে অ্যালোভেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এর উপকারিতা আমাদেরকে দিয়ে থাকে।
  • অ্যালোভেরাতে থাকা এনজাইম এবং অ্যামাইনো এসিড গুলো প্রাকৃতিকভাবে মেদ কমাতে সাহায্য করে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় এবং মানবদেহের রক্ত সঞ্চালনে অ্যালোভেরার উপকারিতা লক্ষণীয়।
  • রূপচর্চায় অ্যালোভেরার উপকারিতা বলে শেষ করার মতো নয়।
  • ত্বকের বিভিন্ন রকম সমস্যা দূর করে তাকে কবুল করার জন্য অ্যালোভেরা প্রাকৃতিকভাবে সেরা উপাদান।
  • চুলের যত্ন প্রাচীনকাল থেকেই অ্যালোভেরা বিশেষ ধরনের ভূমিকা পালন করে আসছে। চুলকে মসৃণ করা, গোড়া থেকে মজবুত করা এবং চুলের ঝরে যাওয়া কমিয়ে আনা থেকে নানান ক্ষেত্রে অ্যালোভেরার উপকারিতা লক্ষণীয়।
  • অ্যালোভেরা মানব দেহের অন্তরনালী পরিষ্কার করে হজম শক্তি বৃদ্ধি ঘটায়।
  • সবচেয়ে বড় কথা এলোভেরা আমাদের দেহের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান সমূহ আমাদের দেহের জন্য অনেক উপকারী।

রূপচর্চায় এলোভেরার উপকারিতা

আজ থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বছর আগে অ্যালোভেরা উদ্ভিদের সন্ধান পাওয়া যায়। প্রায় তখন থেকেই বিভিন্ন পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা ধীরে ধীরে মানুষের নজর কেরে আসছে। রূপচর্চার কথা যখন উঠবে অ্যালোভেরার ব্যবহার তখন থাকবেই।

কেননা অ্যালোভেরা একটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বিহীন প্রাকৃতিক উপাদান যা শুধুই ত্বকের ইতিবাচক ফলাফল প্রদান করে এবং ত্বকের উন্নতি ঘটায়। রূপচর্চার ক্ষেত্রে অ্যালোভেরার অনেক রকম ব্যবহার রয়েছে। তাই বলা যায় যে,  অ্যালোভেরার ঔষধি গুন এবং বিভিন্ন উপকারিতার সামনে অন্য কোনো কিছুই টিকানো অসম্ভব। তবে রূপচর্চায় অ্যালোভেরার কিছু নজর কারা উপকারিতা গুলো হলো নিম্নরুপ।

  • অ্যালোভেরা ত্বকের একনে বা পিম্পলের সমস্যা মিটিয়ে তুলতে সাহায্য করে।
  • অ্যালোভেরা রোদে পুড়ে যাওয়া ত্বককে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনে।
  • আমাদের ত্বকের বলিরেখা দূর করতে অ্যালোভেরা সাহায্য করে।
  • অ্যালোভেরার নিয়মিত ব্যবহারের ফলে বার্ধক্য সহজে পরিলক্ষিত হয় না
  • ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখে ফলে ত্বকে ফাটা বা গোড়ালি ফাটার মত সমস্যা রোধ করার ক্ষমতা রাখে।
  • অ্যালোভেরা ঠোটের প্রাকৃতিক রং ফিরিয়ে আনতে পারে এবং ত্বকের মত ঠোটও উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত রাখে।
  • অ্যালোভেরা মুখের কালো দাগ দূর করতে পারে এবং চোখের নিচে ডার্ক সার্কেলস মিটিয়ে দেয়।

চুলের যত্নে অ্যালোভেরার উপকারিতা

বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ও ডার্মাটোলজিস্টদের মতে, অ্যালোভেরা চুলের জন্য এক বিশেষ উপকারী উপাদান। এর পুষ্টিগুণ আমাদের চুলের যত্নে কোন কমতি রাখে না। অ্যালোভেরাতে সমৃদ্ধ ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই এবং এর বিটা কারোটিন, ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ফর্মুলা সমূহ চুলের স্ক্যাল্পে গিয়ে চুলের ঝরে পড়া কমায় ও চুলের প্রাকৃতিক তেলকে বজায় রেখে চুলকে গড়ে তোলে আরো ঝলমলে, ঘন ও মসৃণ।

চুলের যত্ন নেয়ার জন্য অ্যালোভেরা কে অনেক ভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে এবং এর জন্য বিশেষ কোন পদ্ধতির দরকার হয় না। এজন্যই অ্যালোভেরা কে সবচেয়ে সহজ ও প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা হয় কেননা অ্যালোভেরা কে যেভাবে পারে সেভাবেই ব্যবহার করে এর পুষ্টিগুণ ও প্রাকৃতিক ফলাফল নিজের মধ্যে আবদ্ধ করে নিতে পারে।

  • এছাড়াও অ্যালোভেরার একটি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান চুলের স্ক্যাল্পে প্রবেশ করে চুলের খুশকি দূর করে এবং যেকোনো রকমের সংক্রমণ এড়িয়ে চলতে সহায়তা করে।
  • অ্যালোভেরা নিয়মিত ব্যবহারে চুলে শুষ্ক ভাব দূর হবে এবং চুলের গোড়ার এই শুষ্ক ভাব দূর হওয়ার ফলে চুলে কোনরকম অন্যান্য ব্যাকটেরিয়াল উপাদান জায়গা করতে পারে না। এর জন্য অ্যালোভেরা জেল বেশ কার্যকরী।
  • এছাড়া অ্যালোভেরা তে থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান এবং এর অ্যান্টি ফাঙ্গাল উপাদান চুলের গোড়া মজবুত করে চুলের ঝরে পড়া কমায় এবং চুলের খুশকি রোধ করে।
  • অ্যালোভেরা চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে চুলকে ঝলমলে ও মসৃণ করে তোলে। এই ক্ষেত্রে অ্যালোভেরার সাথে মিশ্রিত হওয়া আমলকির রস এর মিশ্রণ এর ব্যবহার বেশ কার্যকরী।
  • ত্বকের পরিচর্যার সময় অ্যালোভেরা যেভাবে কুলিং ফেস মাস্ক হিসেবে নিজের ভূমিকা রেখে গেছে ঠিক সেভাবেই কেল্পের ক্ষেত্রেও অ্যালোভেরা স্ক্যাল্প এর তেলতেলে ভাব দূর করে এবং কালকে ঘটা বিভিন্ন রকমের অস্বস্তি নিঃসরণ করে চুলের জন্য কুলি মাস্কের ন্যায় উপকারী অবদান রাখে।
  • নিজের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে ওঠে চুল পড়ে যাওয়া সমস্যাটা। অ্যালোভেরার ব্যবহারে চুল হয়ে ওঠে মজবুত কারণ এতে থাকা ভিটামিন জাতীয় উপাদানগুলো চুলের গোড়াকে মজবুত করে তোলে।
  • অ্যালোভেরার জেল সরাসরি অথবা অন্যত্র ব্যবহার করেও এর পুষ্টিগুণ আমরা সরাসরি চুলের জন্য ব্যবহার করতে পারি এবং এতে এর কোনো রকম ক্ষতি হয় না। আর যখনই চুল মজবুত হয়ে উঠবে তখনই আমাদের চুল পড়া রোধ হবে এবং চুল হয়ে উঠবে আরও ঘন।

অ্যালোভেরা তেলের উপকারিতা

এতক্ষণ আমরা জানলাম অ্যালোভেরার বিভিন্ন সার্বিক ব্যবহার ও উপকারিতা সম্পর্কে। তবে অ্যালোভেরার তেল সম্পর্কে আমরা কয়জন জানি? সেই প্রাকৃতিক উপায়ে অ্যালোভেরা থেকে এলোভেরা তেলের প্রস্তুতকরণ পদ্ধতি প্রচলিত হয়ে আসছে। এমনকি এই তেল তৈরি বাড়িতেও সম্ভব।

অ্যালোভেরার পাতা থেকে নেয়া রসের সাথে পরিমাণ মতো নারকেল তেল মিশ্রণ করলে যেই মিশ্রণ প্রস্তুত হবে সেটিই অ্যালভেরার তেল। চুলের বৃদ্ধিতে অ্যালোভেরা তেল এর অনেক ভুমিকা রয়েছে। এই তেল ব্যবহারে চুলের গোড়ার সংক্রমণ সারিয়ে চুল মসৃণ হয়ে ওঠে। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন করে ব্যবহার করলেই চুলের মধ্যে এই তেলের উপকারিতা ফুটে উঠবে।

লেখক এর মন্তব্য

আশা করি আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা অ্যালোভেরার ঔষধি গুন এবং বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে বেশ কিছু জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে আপনাদের যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা কোনো মন্তব্য জানাতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন এবং শেয়ার করার মাধ্যমে আপনার আশেপাশের মানুষকে অ্যালোভেরার গুন সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দিন।
ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url