নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য

নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সংশ্লিষ্ট বিষয়বস্তু নিয়ে আজকের আমাদের এই পোস্ট এর আলোচনা। নিম পাতার এই আলোচনার সাথে আরোও সংযুক্ত হয়েছে চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কিত বিস্তারিত আলোচনা। তাই আজকের এই পোস্ট এর সাথে থাকুন এবং মনোযোগ সহকারে করুন যেন নিমপাতা সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় তথ্য আপনি জেনে নিতে পারেন।
নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য
নিম পাতার সাথে আমরা তাই সবাই পরিচিত। প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে প্রাপ্ত এই নিমপাতার ঔষধি গুন ও নানান উপকারিতা সম্পর্কে আমরা কমবেশি প্রায় সকলে অবগত রয়েছি। তবে নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে সঠিক তথ্য কয়জনই বা জানে? এর ঔষধি গুণের জন্য চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার বেশ আলোচিত। চলুন আজকের পোষ্টের মাধ্যমে নিমপাতা এর উপকারিতা সম্পর্কিত বিস্তারিত বিষয়বস্তু জানা যাক।

ভূমিকা

মেহগনি পরিবারের এক গাছ থেকে প্রাপ্ত পাতাই নিমপাতা। নিম গাছ দ্রুত বেড়ে উঠে এবং এটি ঔষধি গুণ এর জন্য অধিক পরিচিতি লাভ করে। তাছাড়া নিম গাছ থেকে কীটনাশক পাওয়া যায় বলে একে জৈব কীটনাশক এর উৎস বলে। আজকের পোস্টে আমরা জানব নিম পাতার ভেষজ গুণ, নিম পাতার রস খাওয়ার নিয়ম, নিম পাতার গুড়া খেলে কি হয়, নিম পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা এবং নিম পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।

নিম পাতার ভেষজ গুণ

নিম পাতার বহুবিধ গুনাগুনের উপর ভিত্তি করে নিমকে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান বৃক্ষ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে 'একুশ শতকের বৃক্ষ' হিসেবে ঘোষণাপ্রাপ্ত হয়েছিল নিম। আমাদের ভূখণ্ডে নিমের অস্তিত্ব আজকে থেকে বিদ্যমান নয়। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে নিম বেশি পাওয়া যায়। ভারতবর্ষের দেশীয় বৃক্ষ নিন এবং একে একটি পবিত্র বৃক্ষ হিসেবে বিবেচিত হয়।

নিমের কিছু উপকারী গুণের মধ্যে পরিবেশকে সুরক্ষা দেয়া, স্বাস্থ্য রক্ষাকারী উপাদান হিসেবে, দারিদ্র বিমোচনে, নিম থেকে প্রস্তুত হওয়া ঔষধ, জৈব সার, বিভিন্ন রকম প্রসাধনী, কীটনাশক, রূপচর্চার উপাদান হিসেবে, কৃষিকাজে, আসবাবপত্র তৈরিতে, চর্মরোগ বা ত্বকের সাথে লিপ্ত ক্যান্সার রোধে, ভাইরাস থেকে সুরক্ষা প্রাপ্তে এবং পানির স্তর বজায় রাখতে অন্যতম।

নিম পাতার ভেষজ গুণ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে, বসন্ত সারতে ও বায়ু শোধনকারী হিসেবে অনেক কার্যকরী। এর গুনাগুনের ভিত্তিতে পূর্ব আফ্রিকায় নিম গাছ এর নাম দেয়া হয় মৌরোবিইনি। নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতার বিষয় এর ব্যাখায় জানা যাবে এর ভেষজ গুণ সম্পর্কে যা এতই প্রবল যে এটি প্রাণী কূলের অনেক রকম রোগের উপশম হিসেবে কাজ করে।

নিম পাতা রক্ত পরিষ্কারক, ত্বকের ব্রণ, কৃমিনাশক, রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে, বিভিন্ন রকম চক্ষু সমস্যা, আলসার, পেট ব্যথা, শরীরের অভ্যন্তরীণ ক্ষত কিংবা ত্বকের ক্ষত, যকৃতের সমস্যা, বিভিন্ন রকম জীবাণু নাশক ও নানা রকম রোগ ব্যাধি থেকে দেহকে পরিত্রাণ দিতে সাহায্য করে। নিম পাতার ভেষজ গুনাগুনে চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার বহু ক্ষেত্রে প্রচলিত।

তাই শরীরের বিভিন্ন রকম এলার্জি বা জ্বালাপোড়া নিরাময়ে নিম পাতা ব্যবহারে প্রাপ্ত উপকারিতা অনস্বীকার্য। তাছাড়া নিমপাতা মুখে দুর্গন্ধ নাশক হিসেবেও কাজ করে। দাঁতের মাড়ি মজবুত করতে এবং দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত ঝরা বন্ধে নিম পাতা উপকারী। এছাড়াও অধীনতা মাথাব্যথা এবং ডায়াবেটিসের মতো নানাবিধ রোগ বাধি নিরাময়ে নিম পাতা সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য উপশম।

নিম পাতার রস খাওয়ার নিয়ম

নিম পাতা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে এবং শরীরকে নানা রকমের রোগ-বলা থেকে সুরক্ষিত রাখতে ও মুক্তি দিতে বিশেষ এক প্রাকৃতিক উপাদান। প্রতি কাপ নিমপাতা তে থাকে পয়ত্রিশ গ্রাম ক্যালরি যা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে ও সঠিক পরিমাণে নিয়ে আসতে সহায়ক। সাথেই এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টি-ভাইরাল বৈশিষ্ট্য প্রাণীদেহের ত্বক ও পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।

এবং শরীরের অভ্যন্তরীণ ব্যাকটেরিয়া ছড়াতে অর্থাৎ অন্তরের ব্যাকটেরিয়া নিরাময়ে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। প্রতিদিন সকালে কচি নিম পাতা থেকে রস বের করে খালি পেটে সেবন করলে তা ডায়াবেটিস রোধ করতে সাহায্য করে। এর জন্য পাঁচটি গোলমরিচ এবং প্রায় দশটির মতো কচি নিমপাতা একসঙ্গে পিষে তার রস বের করে সকালে পান করতে হবে।

এছাড়াও নিম পাতার সঙ্গে চিনি, মিশরি কিংবা মধু মিশিয়ে সেবন করলে ঠান্ডা জনিত রোগ থেকে মুক্তি লাভ সম্ভব। এছাড়াও এটি শারীরিক বিভিন্ন রকম জটিলতা ও অসুস্থতা সারিয়ে তোলে। এর জন্য কিছু নিমপাতা মিহি করে পিষে নিতে হবে যেন এর রস বেরিয়ে আসে এবং সেটি মধূ কিংবা মিশরির সঙ্গে মিশিয়ে পান করতে হবে।

নিম পাতার গুড়া খেলে কি হয়

আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে উল্লেখিত বিশেষজ্ঞদের মতে, বিভিন্ন রকম রোগ নিরাময়ে বহুকাল ধরে নিম পাতা কে বিভিন্ন ভাবে কাজে লাগানো হয়ে আসছে। নিম পাতা শারীর স্বাস্থ্যর উন্নতি বৃদ্ধিতে এবং স্বাস্থ্যের গঠন নিয়ন্ত্রণে রাখতে নানাভাবে ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রতিদিন সকালে অন্ততপক্ষে দুইটি নিমপাতা গুড়ো করে খালি পেটে খেলে তা আমাদের শরীরে আগত সমস্যা থেকে শরীরকে সুরক্ষা দিবে।

নিয়মিত নিম পাতা বা নিম পাতা শুকিয়ে তা গুঁড়ো করে খেলে এতে থাকা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যেমন অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি - ভাইরাল ও অ্যান্টি- মাইক্রোবিয়াল উপাদান দেহের ইমিউনিটি অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন রকম সংক্রমণ থেকে শরীরকে রক্ষা করে। শুকনো নিম পাতা কিনব নিম পাতা খেলে এটি শরীরের বিষাক্ত উপাদানগুলো দূর করতে পারে এবং বিষাক্ত উপাদান দূর করার মাধ্যমে শরীরকে রোগ মুক্ত করে তোলে।

এছাড়াও খালি নিমের গুড়া ছেলে এটি শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর করার সাথে পেট যেমন অজীর্নতা, পেট ফাঁপা কিংবা ব্যথার মতো বিভিন্ন রকম শারিরীক সমস্যা দূর করে। এবং বিশেষভাবে নিমপাতার গুড়ো খাওয়ার ফলে এটি ত্বকের সৌন্দর্য ও মসৃনতা বৃদ্ধি করে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যাকে দূর করে, ত্বকে সংক্রমণ রোধ করে এবং বসন্ত ও এলার্জি জাতীয় বিভিন্ন সমস্যার নিরাময় ঘটায়।

তবে নিম পাতা অবশ্যই পরিণত পরিমাণে খেতে হবে কারণ কোন কিছুই অতিরিক্ত পরিমাণে ঠিক নয়। এ বিষয়ে সতর্ক হওয়ার জন্য নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা উভয় বিষয়ে জেনে রাখা দরকার।

চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার

চর্মরোগ নিরাময়ে এক বিশেষ কার্যকরী উপাদান হলো নিম। শুনতে যতটা সহজ মনে হচ্ছে চর্ম রোগ ততটা সহজ নয়। চর্মরোগে আক্রান্ত ব্যক্তির প্রাত্যহিক জীবন মারাত্মক আকারে ক্ষতিগ্রস্ত হয় যার ফলে ব্যক্তিকে নানারকম বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়। নিম গাছের ঔষধি গুণ এই গাছের সর্বত্র বিদ্যমান। নিমের শিকড়, পাতা, ফুল, বীজ, বাকল সবকিছুতেই ভেষজ গুণ লুকিয়ে আছে। নিম এর অ্যান্টি-ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য ত্বকের বিভিন্ন রকম সংক্রমণ এবং রোগ নিরাময়ে কার্যকরী। ত্বকের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিমপাতার ব্যবহার নিম্নে দেয়া হলো।
  • নিম পাতার পেস্ট এর ব্যবহারে ত্বকের বিভিন্ন সংক্রমণ এর নিরাময়। নিম পাতার সঙ্গে নিমের ছাল/বাকল এবং বীজ একই সাথে বেটে পেস্ট বানিয়ে তা সংক্রমণের স্থানে লাগালে এটি ত্বকের সেই সংক্রমণগুলোতে স্বস্তি দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে এটি হতে পারে ত্বকের সংক্রমণের বিশেষ উপশম। চুলকানি জনিত সমস্যা, দাউদ, একজিমা, ফোড়া, ব্রণ ইত্যাদি ত্বকের সংক্রমণে এই পেস্ট ব্যবহারযোগ্য এবং এটি তাৎক্ষণিক ভাবে খুবই কার্যকরী একটি মিশ্রণ।
  • একজিমার মত চর্ম রোগে নিম পাতা নেটে তার রস বের করে সেই রস সরাসরি লাগালে কিংবা রসে ভিজিয়ে তা সমস্যায় আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে রাখলে কার্যকরী উপকার পাওয়া যায়।
  • খালি নিমপাতা বেটে তার পেজ তৈরি করে তা ত্বকের ক্ষততে ব্যবহার করলে এটি খুব দ্রুত ত্বকের ক্ষত সেরে ফেলে।
  • পিষে রাখা নিম পাতার পেস্টের সঙ্গে কখনো কখনো নিমের শুকনো ছালের গুড়ো মিশিয়ে কিংবা নিম পাতার গুঁড়ো সঙ্গে মধু মিশিয়ে ব্যবহারে কিংবা মিমের পাউডার জলে ভিজিয়ে খেলে এটি নানা রকম চর্মরোগ থেকে মুক্তি দেয়।

নিম পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা

নিম পাতার রস খালি পেটে সেবনে এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি, অ্যান্টি-ভাইরাল, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, ও অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান এর ফলে অনেক রকম উপকারিতা পাওয়া সম্ভব। তখন কোন কিছুরই যেমন দুটি পিঠ থাকে তেমনি নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা উভয়ই রয়েছে। নিম পাতার রস খেলে যে উপকারিতা পাওয়া যায় তা নিম্নে সংজ্ঞায়িত করা হলো।

ডায়াবেটিস মোকাবিলায় নিমপাতাঃ নিম পাতায় বিদ্যমান অ্যান্টি ডায়াবেটিক বৈশিষ্ট্য দেহে রক্তে থাকা শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ডায়াবেটিস থেকে পরিত্রাণের জন্য নিম পাতা খুবই কার্যকরী উপাদান।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেঃ নিম পাতার আন্টি ইনফ্লামেটরি এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য মানবদেহের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা নিয়ে আসে এবং বৃদ্ধি করে। ফলে শরীরে আগত বিভিন্ন সংক্রমণ রোগ থেকে শরীর নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়।

চর্ম রোগ নিরাময়ঃ নিম পাতা ত্বকের বিভিন্ন রকম সমস্যা দূর করে। এতে বিদ্যমান অ্যান্টি ফাংগাল এবং আন্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য ত্বকে ফুসকুড়ি, ব্রণ, চুলকানি, দাউদ, ছত্রাক, ঘা, ক্ষত ইত্যাদি রকম সংক্রমণ থেকে ত্বককে পরিত্রাণ দেয়।

হজম শক্তির উন্নয়ন ঘটায়ঃ নিম পাতাতে থাকা বিভিন্ন রকম বৈশিষ্ট্য ও উপাদান সমূহ হজম শক্তি বাড়ায় এবং পেটের বিভিন্ন রকম সমস্যা দূর করে। যেমন গ্যাসের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা, ডায়রিয়া, পেট ফাঁপা ইত্যাদি।
রক্ত পরিষ্কারঃ নিম পাতা দেহ থেকে বিষাক্ত উপাদান দূর করে রক্তকে পরিষ্কার করে তোলে।

চুল ও মাথাব্যথাঃ নিম পাতাতে থাকা বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি চুলের গোড়া থেকে খুশকি এবং উকুন দূর করে চুল পড়া রোধ করে এবং মাথা ব্যাথার মত সমস্যা কমিয়ে আনে।

নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

নিম গাছকে সাধারণত মানুষ ঔষধি গাছ হিসেবে চিনে থাকে। প্রাচীনকালে এই গাছের পাতা দিয়ে মানুষ নানা রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা করে থাকতো। এই গাছের পাতা, ডাল, ছাল, ফল ও শিকড়কে শরীরের জীবাণু ধ্বংসের প্রধান ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হতো। নিম পাতা উপকারী গুণের মাধ্যমে আমাদের শরীর থেকে টক্সিন অপসারণ করে ত্বক ও শরীরের আভ্যন্তরীণ অবস্থার উন্নতি ঘটায় এবং বিভিন্ন রকম রোগব্যাধি থেকে দূরে রাখে। নিম্নে নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেয়া হলো।

নিম পাতার উপকারিতা

আমাদের এই ব্যস্ত জীবনে আমরা নিজেদের এবং নিজেদের শরীরের ও ত্বকের যত্ন নিতে প্রায় ভুলেই গিয়েছি। তবে নিমপাতা দ্বারা আমরা খুব সহজে ও খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নিজের শরীরের ও ত্বকের যত্ন নিতে পারি। আসুন জেনে নেই নিম পাতার কিছু উপকারিতা যা নিচে উল্লেখ করা হলো।
  • ত্বককে প্রাণবন্ত রাখতে ও ত্বকের বিভিন্ন রকম সমস্যা (র‍্যাশ, চুলকানি, এলার্জি জনিত ত্বকের বিভিন্ন রোগ, ফোসকা, জ্বালা-পোড়া ইত্যাদি) দূর করতে নিম পাতা বেশ উপকারী প্রাকৃতিক উপাদান।
  • মুখের ভেতরে নানা রকম সমস্যা দূর করতে নিম পাতার উপকারী দিকগুলো দৃশ্যমান হয়। যেমনঃ মুখের দুর্গন্ধযুক্ত নির্যাস দূর করতে, মাড়ির রোগ নিরাময়ে, মুখ-গহ্ববরের রোগ নিরাময়ে, মাউথওয়াশ বা টনিক হিসেবে কার্যকরী ভূমিকায় নিম পাতার উপকারি দিক রয়েছে।
  • আয়ুর্বেদী চিকিৎসার খেতে নিমের ব্যবহার রয়েছে।
  • প্রজনন স্বাস্থ্য নিমের উপকারী বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
  • মাথার চুলের উকুনের সমস্যা কিংনা চুলের অন্যান্য যত্নের ক্ষেত্রে নিম পাতার ব্যবহার অতুলনীয়। এছাড়া মাথাব্যথা কমাতেও নিমপাতা সহায়ক।
  • নিম পাতায় থাকা গ্যাস্ট্রোপ্রটেক্টিভ বৈশিষ্ট্য শরীরের আলসার রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়ক ভুমিকা রাখে।
  • ক্যান্সারের মতো দূরারোগ্য রোগের ক্ষেত্রেও নিম পাতা এর কার্যকরী ভূমিকা উল্লেখ করে রেখেছে।

নিম পাতার কিছু অপকারিতা

সচরাচর নিমপাতায় তেমন একটা অপকারিতা দেখা যায় না তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয়। যেমন-

গর্ভাবস্থাতে নিমপাতাঃ গর্ভাবস্থায় নিমপাতা এড়িয়ে না চললে এটি শুক্রাণু কোষ নষ্ট করে দেয় যার ফলে গর্ভবতী ভুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই গর্ভাবস্থায় কোন প্রকার রোদ প্রতিরোধের জন্যও নিমপাতা ব্যবহার করা যাবে না।

শিশুদের ক্ষেত্রেঃ শিশুদের ক্ষেত্রে সর্বদাই সচেতনতা অবলম্বন জরুরী কেননা নিম পাতার মত জিনিসও তাদের জন্য ক্ষতিকর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে মিমের মাধ্যমে শিশুদের রে-সিন্ড্রম দেখা দেয়।

ক্লান্তি বা অবসাদঃ আয়ুর্বেদ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের অনুসারে দুর্বল প্রকৃতির মানুষদের নিম বা নিম থেকে তৈরি যেকোনো কিছু সেবনে নিজেকে সতর্ক রাখা উচিত কেন না এটি নিরাময়ের বদলে অসুস্থতার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।

নিম পাতা খাওয়ার নিয়ম

নিম পাতা খাওয়ার কিছু নিয়ম অবশ্যই রয়েছে। নিম পাতা যতই উপকারে প্রাকৃতিক উপাদান হোক না কেন এরও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। অতিরিক্ত পরিমাণে সেবন করলে কিংবা দীর্ঘ মেয়াদী নিম পাতার সেবনে এর উপকারী দিকের বদলে ক্ষতিকর দিকগুলো বেশি প্রভাবিত হবে। তাই এর ব্যবহারে সঠিক নিয়ম জেনে রাখা উচিত।

নিম পাতা একেক জন একেক ভাবে খেতে পারেন। ঔষধি হিসেবে এই নিমপাতাকে পিষে কিংবা রস বের করে খাওয়া সম্ভব। গুঁড়ো করে কিংবা পিষে খাওয়াটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রের নিয়মে অনুসারীত হয়। তবে সাধারণ ক্ষেত্রে নিমপাতা খেতে চাইলে দৈনন্দিন চার থেকে পাঁচটি নিমপাতা খাওয়া যেতে পারে।

খালি পেটে চার থেকে পাঁচটি নিমপাতা সরাসরি কিংবা বের করে কিছু সাথে মিশিয়ে কিংবা পানি ও মধু মিশিয়ে শরবত বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে এই চার থেকে পাঁচটি নিমের পরিমাণও দীর্ঘদিন পর্যন্ত চলমান রাখা যাবে না। অবশ্যই দশ সপ্তাহ পর্যন্ত এটি খাওয়া নিরাপদ হতে পারে। কেননা নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা উভয়ই রয়েছে।

লেখক এর মন্তব্য

আশা করি উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে মৌলিক ধারণা অর্জন করতে পেরেছেন। নিম পাতা সম্পর্কিত এই পোস্টে আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে অথবা কোন মতামত জানাতে চাইলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন এবং এই পোস্টটি শেয়ার করার মাধ্যমে আপনার আশেপাশের সকলকে নিম পাতা ও এর ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার সুযোগ করে দিন।
ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url